Friday, April 11, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় ভালুক সমেত আটক যুবক

 বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় ভালুক সমেত আটক যুবক

Youth arrested with bear in Sarenga, Bankura:বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় ঘটল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা! শনিবার সারেঙ্গা দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মীরা এক যুবককে আটক করলেন, যার হেফাজতে ছিল একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ভালুক। অভিযোগ, যুবকটি এই ভালুক নিয়ে খেলা দেখানোর উদ্দেশ্যে এলাকায় এসেছিল। বনদপ্তরের তৎপরতায় ঘটনার পর্দাফাঁস হয়, আর মুহূর্তের মধ্যেই সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। জানা গেছে, ধৃত যুবকের নাম মো: রাজ কালান্দর, তিনি বিহারের বাঁকা জেলার ডালিয়া, বাঁউশি এলাকার বাসিন্দা। বনদপ্তরের অনুমান, বেআইনি উপায়ে ভালুকটিকে আটক করে খেলা দেখানোর জন্যই যুবকটি বাঁকুড়ায় এসেছিল। সূত্রের খবর, পিঠাবাকড়া এলাকার গ্রামবাসীরা প্রথমে ঘটনাটি লক্ষ্য করেন। স্থানীয়রা দেখতে পান, এক যুবক রাস্তার ধারে ভালুক নিয়ে খেল দেখাচ্ছে, আর তা দেখতে জনতার ভিড় জমে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাটি নজরে আসে বনদপ্তরের। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ভালুকটিকে উদ্ধার করে ওই যুবককে আটক করে। বাঁকুড়া দক্ষিণের DFO প্রদীপ বাউরি জানান, “বন্যপ্রাণী সুরক্ষা সংশোধন আইন, ২০২২-এর বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘনের জন্য ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীকাল সকালে অভিযুক্তকে খাতড়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে।” বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভালুকটিকে আপাতত বনদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে এবং তার শারীরিক পরীক্ষা করা হবে।

তবে প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এই যুবক বিহার থেকে ভালুকটি নিয়ে বাঁকুড়ার মতো জায়গায় এল? আদৌ কি একা সে এই কাজ করছিল, নাকি এর পেছনে কোনো চক্র কাজ করছে? বনদপ্তর এখন এই ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। স্থানীয় মানুষও এই ঘটনার পর আতঙ্কিত। অনেকেই বলছেন, যদি বনদপ্তরের নজরে না আসত, তাহলে হয়তো ভালুকটিকে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়ভাবে খেলা দেখানো হতো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে বন্যপ্রাণী আটকে রাখা এবং খেলা দেখানো সম্পূর্ণ বেআইনি। এর ফলে বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়, পাশাপাশি এটি বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের কাজের সঙ্গেও যুক্ত হতে পারে। বনদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ধৃত যুবককে জেরা করে বোঝার চেষ্টা চলছে, এর পেছনে কোনো বড় পাচার চক্র রয়েছে কিনা। যদি থাকে, তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রামবাসীদের অনেকেই বলেন, “আমরা তো প্রথমে বুঝতেই পারিনি যে এটি বেআইনি, কিন্তু পরে যখন বনদপ্তর এসে জানালো, তখন বুঝতে পারলাম।” অন্যদিকে, বনদপ্তর এই ঘটনায় সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার আবেদন জানিয়েছে। তারা বলছে, “যদি কোথাও এধরনের বেআইনি কাজ চোখে পড়ে, তবে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাতে হবে।

বন্যপ্রাণী সুরক্ষিত থাকলে, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় থাকবে।” বর্তমানে ভালুকটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে বনদপ্তর নিশ্চিত করতে চাইছে, ভালুকটিকে যথাযথ পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা। এই ঘটনার পর বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় বনদপ্তরের নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে, যেখানে এধরনের কার্যকলাপের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। এখন দেখার, ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং উদ্ধার হওয়া ভালুকটির ভবিষ্যৎ কী হয়। তবে এই ঘটনা স্পষ্ট করে দিল, এখনও দেশে বেআইনি বন্যপ্রাণী শিকার এবং ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, এবং প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments