Youth arrested for raping 19-year-old girl in Kalyani:কল্যাণীর শান্ত শহর জুড়ে হঠাৎই ছড়িয়ে পড়ে এক চরম নৃশংসতার খবর। শনিবার গভীর রাতে মুরাতিপুর এলাকায় ঘটে যায় এমন একটি ঘটনা, যা শুধু ওই নির্যাতিতা যুবতীর জীবনকেই ওলটপালট করে দেয়নি, বরং গোটা এলাকাকে হতবাক ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। মাত্র ১৯ বছরের এক যুবতীকে ফোনে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে তারই পরিচিত এক যুবক, যার বয়স ২৭ বছর। ঘটনাটি ঘটে কল্যাণীর একটি স্কুলের পেছনের ফাঁকা জায়গায়, রাতের অন্ধকারে, যেখানে না ছিল আলো, না ছিল কোনও সাহায্যের সম্ভাবনা। পরিবার জানিয়েছে, রাতের দিকে মেয়েকে ঘরে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁরা। কিছু সময় পর যুবতীর মা দেখতে পান, মেয়েটি ছেঁড়া জামাকাপড় পরে, চোখে-মুখে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরোচ্ছে স্কুলের পেছন থেকে। তার পাশেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বেরোতে দেখা যায় অভিযুক্ত যুবককে। সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষুব্ধ মা যুবকের জামার কলার ধরে চড়-থাপ্পড় মারেন এবং স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আটকে রেখে খবর দেন থানায়।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কল্যাণী থানার পুলিশ এবং অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। রবিবার দুপুরে নির্যাতিতাকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য কল্যাণী জহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে পাঠানো হয়। মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, যুবতীর শরীরের একাধিক অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা তার উপর অত্যাচারের প্রমাণ বহন করে। যুবতীর বাবার কথায়, “এই ছেলে আগে থেকে ওর পেছনে ঘুরতো, আমাদের সন্দেহ ছিল, কিন্তু এত বড় অপরাধ করবে ভাবিনি। এখন আমরা চাই কঠোর শাস্তি।” অভিযুক্ত যুবক মুরাতিপুর এলাকার বাসিন্দা, স্থানীয়ভাবে পরিচিত হলেও সম্প্রতি সে নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছিল বলে দাবি করেছে এলাকাবাসী। কল্যাণী থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার ফোন ও মেসেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় শিউরে উঠেছেন স্থানীয়রা। এক প্রতিবেশী বলেন, “স্কুলের পেছনটা আগে থেকেই ঝোপঝাড়ে ভর্তি, আলোর ব্যবস্থা নেই। আগেও অনেক ছেলেমেয়ে ওখানে গিয়ে সময় কাটাতো। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটবে ভাবিনি

” এই ঘটনার পর থেকে প্রশ্ন উঠছে—একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এত দুর্বল কেন? স্কুল কর্তৃপক্ষও এই ঘটনার পরে নিরাপত্তা জোরদার করার আশ্বাস দিয়েছে। ইতিমধ্যেই কল্যাণী পৌরসভা এবং পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে এলাকা পরিদর্শন করেছে এবং ওই এলাকার আলো এবং নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যায় এলাকার মহিলারা একটি মোমবাতি মিছিল করেন এবং দ্রুত বিচারের দাবি জানান। স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, “এই মেয়েটির পাশে আমরা আছি। ও যেন ন্যায়বিচার পায়, সেটাই এখন প্রধান লক্ষ্য।” সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে যাতে নির্যাতিতা ধীরে ধীরে মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। অপরাধমূলক ঘটনার সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, রাতের সময় মহিলারা যদি বাড়ি থেকে বের হন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। তবে এই ঘটনায় পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ এবং অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। এই ঘটনার ফলে কল্যাণীর সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা চরম আতঙ্ক এবং ক্ষোভে রয়েছেন।