Young man’s pants catch fire while playing with a burning ballঃ ফুটবল খেলতে কার না ভালো লাগে! ফুটবল এমন এক খেলা যা ছোট থেকে বড়, সবাই উপভোগ করেন। কিন্তু কখনো কি জ্বলন্ত বল নিয়ে ফুটবল খেলেছেন? শুনতেই অবাক লাগছে, তাই না? এমনই এক আজব ফুটবল খেলার নেশায় দুই তরুণ পড়লেন বড়সড় বিপদে। আর সেই মজাদার ঘটনাই এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনা যেমন অদ্ভুত, তেমনই ভয়াবহ। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দুই যুবক খেলছেন ফুটবল। কিন্তু এই ফুটবল সাধারণ নয়, এটি জ্বলন্ত বল। হ্যাঁ, বলের চারপাশে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। প্রথমে তাঁরা সেই জ্বলন্ত বলটিকে পা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন। সব ঠিকঠাকই চলছিল।কিন্তু হঠাৎই সমস্যা শুরু হয়। সাহস দেখাতে গিয়ে এক যুবক এমন একটি কাণ্ড ঘটান যা তাঁকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। ফুটবল খেলার সময় পায়ের বদলে পশ্চাদ্দেশ দিয়ে শট মারার চেষ্টা করেন তিনি। আর তারপরই ঘটনার মোড় ঘোরে। জ্বলন্ত বলটি তাঁর পোশাকের স্পর্শে আগুন ছড়িয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে তাঁর প্যান্টে আগুন ধরে যায়। তখন বুঝতে পেরে ওই তরুণ হতভম্ব হয়ে দিকভ্রান্তের মতো এদিক-ওদিক দৌড়াতে থাকেন। তাঁকে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে দৌড়াতে দেখে ভিডিওটি হাসির রোল তুলেছে নেটদুনিয়ায়। কিন্তু ওই মুহূর্তে উপস্থিত লোকজন যুবককে সাহায্য করার চেষ্টা করলেও তিনি নিজেই নিজের আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর গায়ে গুরুতর আঘাত লাগেনি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই ঘটনা থেকে একটি বড় শিক্ষা পাওয়া যায়— আগুন নিয়ে খেলা কিন্তু মোটেও মজার বিষয় নয়।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পর রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এটি একটি ‘সুইচফুটবল’ নামের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই সেটি লক্ষাধিক ভিউ পেয়ে গিয়েছে। মন্তব্যের বাক্সে মজার মজার প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অসংখ্য নেটিজেন। একাংশ ওই যুবকের সাহসের প্রশংসা করলেও, অধিকাংশই এমন কাণ্ডকারখানার তীব্র সমালোচনা করেছেন। কেউ বলেছেন, “বোকামিরও একটা সীমা থাকা উচিত,” তো কেউ বলেছেন, “এটা ফুটবল নয়, বিপদ ডেকে আনার খেলা।” একজন নেটিজেন হাসতে হাসতে মন্তব্য করেছেন, “আগুন নিয়ে খেলে কেউ বিপদ ডেকে আনছে, এটা না দেখলে বিশ্বাস করতাম না!”তবে এই ধরনের ভিডিও যত মজারই হোক না কেন, অনেকেই এটিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে অভিহিত করেছেন। আগুন নিয়ে খেলা যে কত বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন বেশ কিছু ব্যক্তি। একজন লিখেছেন, “একটু ভুলচুক হলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এ ধরনের কাজ বন্ধ হওয়া উচিত।” কেউ কেউ আবার ওই তরুণের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে লিখেছেন, “ভাগ্যিস ওঁর বড় কিছু হয়নি!”
ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব না হলেও এটি যে মানুষকে বেশ বিনোদন জুগিয়েছে, তা বলাই যায়। এই ভিডিওটি একদিকে যেমন মজার, অন্যদিকে তা শিক্ষামূলকও বটে। কারণ, এর মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও দেওয়া যায়—আগুন নিয়ে কখনো খেলতে যাওয়া উচিত নয়। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাহস দেখানোর নামে বিপজ্জনক কাণ্ডকারখানা করার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। তাঁদের উচিত এই ধরনের কাজ থেকে দূরে থাকা। কারণ, কিছু মুহূর্তের মজা কখন যে বড়সড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা বোঝা খুব মুশকিল।স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ভাইরাল হওয়ার লোভে অনেকেই এই ধরনের বিপজ্জনক স্টান্ট করতে ঝোঁকেন। কিন্তু এই প্রবণতা তাঁদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। প্রখ্যাত মনোবিদ অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার লাইক, শেয়ার, এবং ভাইরাল হওয়ার নেশা অনেক তরুণকে বিপজ্জনক কাণ্ড করতে প্ররোচিত করছে। এই বিষয়টি নিয়ে পরিবার এবং সমাজের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া জরুরি। তাঁদের বোঝাতে হবে যে মজা করারও একটা সীমা থাকা উচিত।”
যদিও ভিডিওটি থেকে শিক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি অনেকে মজাও নিচ্ছেন। কিছু মজার মন্তব্যও নজর কেড়েছে। একজন লিখেছেন, “যতদিন ফুটবল খেলেছি, কখনো ভাবিনি যে পেছন দিয়ে শট মারতে গিয়ে পোশাক জ্বলে যাবে!” আরেকজনের মন্তব্য, “এবার বুঝলাম কেন ফুটবলে শুধু পা ব্যবহার করার নিয়ম আছে!”এই মজাদার ভিডিও এবং ঘটনা প্রমাণ করে যে, কখনো কখনো ছোট ভুলও বড় শিক্ষা দিতে পারে। ভবিষ্যতে এই তরুণ নিশ্চয়ই আগুন নিয়ে আর কখনো ফুটবল খেলতে যাবেন না। তাঁর পোশাক জ্বললেও, সৌভাগ্যক্রমে তিনি সুস্থ আছেন এবং হাস্যকর এই ঘটনার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে আলোচনা এখনো থামেনি।এমন ভিডিও থেকে শুধু মজা না নিয়ে আমাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হওয়ার নেশা যদি বিপদ ডেকে আনে, তবে সেটি কখনোই কাম্য নয়। আগুন নিয়ে ফুটবল খেলার সাহস দেখিয়ে এই তরুণ হয়তো কিছুক্ষণের জন্য সবার মনোরঞ্জন করেছেন, কিন্তু এর ফলে তিনি কত বড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন, তা ভবিষ্যতে ভেবে হয়তো নিজেও অবাক হবেন।