Friday, April 11, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যখেলাজয়ী বাবুপূর ফুটবল ক্লাব

জয়ী বাবুপূর ফুটবল ক্লাব

Winner Babupur Football Club : শীতের মরশুম মানেই বাংলার মাঠে-ময়দানে ফুটবল উন্মাদনা। শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র যেন ফুটবলের জোয়ার। শিল্পাঞ্চল শহর রানীগঞ্জের শিশু বাগান ফুটবল ময়দানে এমনই এক উত্তেজনাপূর্ণ নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে ৪ জানুয়ারি থেকে। শিশু বাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে মোট ১৬টি দল, আর প্রতিযোগিতাটি চলবে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত।

প্রথম দিনের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সিহাসোল বাহিনী সংঘ এবং বিবেক একাদশ রানীগঞ্জ। তবে আসল উত্তেজনা ছড়িয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচে, যেখানে বাবুপূর ফুটবল একাডেমি পেনাল্টি শুট আউটে মধু ডাঙ্গার পান্ডেশ্বর দলকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে। খেলার প্রথমার্ধে গোলশূন্য অবস্থায় ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে মধু ডাঙ্গা এক গোলে এগিয়ে যায়। কিন্তু বাবুপূর ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়দের মনোবল এতটুকু কমেনি। খেলার শেষ মুহূর্তে বাবুপূরের স্ট্রাইকারের দুর্দান্ত গোলে খেলা সমতায় ফেরে।

পেনাল্টি শুট আউটের সময় বাবুপূরের গোলরক্ষক রবি মান্ডীর অসাধারণ পারফরম্যান্স দর্শকদের মুগ্ধ করে। পরপর দুটি পেনাল্টি সেভ করে তিনি বাবুপূর দলের জয় নিশ্চিত করেন। এই ম্যাচে রবি মান্ডীর দক্ষতা ও সাহসিকতা নিয়ে দর্শকরা অভিভূত। ম্যাচ শেষে বাবুপূরের কোচ কুণাল চক্রবর্তী বলেন, “রবি আজ প্রমাণ করেছে যে কঠিন পরিশ্রম এবং আত্মবিশ্বাস থাকলে সব বাধা পেরোনো সম্ভব। পুরো দল ওর জন্য গর্বিত।”

শিশু বাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন রানীগঞ্জবাসী। ক্লাবের অন্যতম সদস্য প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “এমন একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা আমাদের কাছে খুবই গর্বের। ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটি মানুষের জীবন ও সমাজের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। এই প্রতিযোগিতা তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।”

বাবুপূর ফুটবল একাডেমির সাফল্য শুধু একটি ম্যাচ জেতার গল্প নয়; এটি তাদের কঠোর পরিশ্রম, একতার শক্তি, এবং সংকল্পের ফল। এই একাডেমি স্থানীয় তরুণদের ফুটবলে দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ করে দিচ্ছে। দলটির কোচ কুণাল চক্রবর্তী এবং ম্যানেজার অমল ঘোষ প্রতিদিনের কঠোর অনুশীলন এবং খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তাকে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। বাবুপূরের অধিনায়ক অজয় সিং বলেন, “আমাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা জানি, একসঙ্গে লড়াই করলে আমরা যে কোনো কিছু অর্জন করতে পারি।”

এই ফুটবল প্রতিযোগিতা শুধু একটি খেলা নয়, এটি স্থানীয় মানুষের জীবনে নতুন রঙ এবং আশা যোগ করেছে। শিশু বাগানের ময়দানে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন এলাকার মানুষ। এই প্রতিযোগিতা রানীগঞ্জের মানুষের মধ্যে একতা এবং ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

বাংলার ফুটবল ঐতিহ্য আরও একবার উঠে এসেছে এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে। এই ধরনের প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের নয়, সমগ্র সমাজকেও উৎসাহিত করে। রানীগঞ্জ রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের অভিজ্ঞ জাজরা ম্যাচ পরিচালনা করছেন, যা এই প্রতিযোগিতার মান আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ezgif 6 883119daad

এত বড় একটি আয়োজন সফল করতে ক্লাবের সক্রিয় সদস্যরা দিনরাত কাজ করছেন। প্রদীপ মণ্ডল, অক্ষয়, সিকান্দার, অমিত দাসসহ অনেকেই এই উদ্যোগের পেছনে কাজ করছেন। তারা জানিয়েছেন, “আমরা চাই এই ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নতুন প্রতিভা উঠে আসুক। এই প্রতিভারা একদিন বাংলার গর্ব হবে।”

বাবুপূর ফুটবল একাডেমির সাফল্য যেন তাদের ভবিষ্যৎ জয়ের সূচনা। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তারা একবার প্রমাণ করল যে ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটি আবেগ, শক্তি, এবং সমাজের বন্ধন। রানীগঞ্জের মানুষ এই প্রতিযোগিতার জন্য গর্বিত এবং তারা আশা করছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলার ফুটবল নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments