Why has a US court blocked Donald Trump tariffs: ২০২৫ সালের ২ এপ্রিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে “লিবারেশন ডে” ঘোষণা করেন এবং একটি নতুন শুল্কনীতি প্রবর্তন করেন। এই শুল্কনীতির আওতায়, প্রায় সমস্ত আমদানি পণ্যের উপর ১০% হারে শুল্ক আরোপ করা হয়, এবং নির্দিষ্ট কিছু দেশের পণ্যের উপর আরও উচ্চ হারে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, চীনের পণ্যের উপর ১২৫%, ভারতের উপর ২৬%, বাংলাদেশের উপর ৩৭%, পাকিস্তানের উপর ২৯% এবং ভিয়েতনামের উপর ৪৬% হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। এই শুল্কনীতির উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা প্রদান করা।
Read More:
https://kbnewz.com/5-dead-in-collision-between-lorry-and-auto-in-kanthi/
তবে, এই শুল্কনীতি নিয়ে মার্কিন ব্যবসায়ী মহলে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। বিশেষ করে ছোট ব্যবসায়ীরা এবং আমদানি নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলি এই শুল্কনীতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন। এই প্রেক্ষিতে, ২০২৫ সালের ২৮ মে, আমেরিকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক আদালত (U.S. Court of International Trade) রায় দেয় যে, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি অবৈধ এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছে। আদালত উল্লেখ করে যে, আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (International Emergency Economic Powers Act – IEEPA) প্রেসিডেন্টকে এমন শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দেয় না। এই রায়ের ফলে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি কার্যকর হওয়া থেকে স্থগিত রাখা হয়।Al Jazeera+6Tom’s Hardware+6The Washington Post+6

তবে, হোয়াইট হাউস এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং ২০২৫ সালের ২৯ মে, ফেডারেল আপিল আদালত ট্রাম্পের শুল্কনীতি সাময়িকভাবে বহাল রাখার আদেশ দেয়। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কুশ দেশাই বলেন, “ট্রেড ঘাটতি আমাদের জাতীয় জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের কমিউনিটিকে ধ্বংস করেছে, আমাদের শ্রমিকদের পিছনে ফেলে দিয়েছে এবং আমাদের প্রতিরক্ষা শিল্পকে দুর্বল করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে প্রথমে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং এই সংকট মোকাবেলায় নির্বাহী ক্ষমতার সমস্ত লিভার ব্যবহার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এই শুল্কনীতির ফলে বিশ্ববাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। চীন পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকার পণ্যের উপর ৩৪% হারে শুল্ক আরোপ করে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও প্রতিক্রিয়া জানায়। এই পরিস্থিতিতে, আমেরিকার ছোট ব্যবসায়ীরা এবং আমদানি নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলি, যেমন এনভিডিয়া এবং টিএসএমসি, এই শুল্কনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়।
Why has a US court blocked Donald Trump tariffs
বর্তমানে, এই শুল্কনীতি নিয়ে আইনি লড়াই চলমান রয়েছে এবং আগামী দিনে সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে চূড়ান্ত রায় হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ববাণিজ্য এবং আমেরিকার অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি উভয়ই অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
এই ঘটনার প্রভাব শুধুমাত্র আমেরিকায় সীমাবদ্ধ নয়; ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিও এই শুল্কনীতির কারণে প্রভাবিত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প, ভারতের প্রযুক্তি খাত এবং পাকিস্তানের কৃষি পণ্য রপ্তানি এই শুল্কনীতির ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক, বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি কীভাবে পরিবর্তিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে, এই ঘটনা বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এক দেশের নীতিগত সিদ্ধান্ত কিভাবে গোটা বিশ্বে প্রভাব ফেলতে পারে।