Who is the Balochistan Liberation Army, a new chapter in the insurgency? পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ১১ মার্চ ঘটে যাওয়া একটি ভয়াবহ ঘটনায় সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী যাত্রীবাহী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
বিএলএ একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যা বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। তাদের দাবি, পাকিস্তান সরকার বেলুচ জনগণের অধিকার হরণ করছে এবং তাদের সম্পদ শোষণ করছে। এই গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আসছে।
ট্রেন হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত অভিযান চালিয়ে ১৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে এবং গোষ্ঠীর ২৭ সদস্যকে হত্যা করে। তবে সব সদস্যকে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই ঘটনায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
বেলুচিস্তানের এই বিদ্রোহ দীর্ঘদিনের। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এই প্রদেশটি পাকিস্তানের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ৪৪% হলেও, জনসংখ্যা কম এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নেও পিছিয়ে। বেলুচ জনগণ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, তাদের সম্পদ ব্যবহার করে পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশ উন্নত হচ্ছে, অথচ বেলুচিস্তানের উন্নয়ন উপেক্ষিত। এই অসন্তোষ থেকেই বিদ্রোহের জন্ম।
বিএলএ’র এই হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করে। এছাড়া, এটি আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। বিশেষ করে, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, যা বেলুচিস্তানের মধ্য দিয়ে গেছে।
স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই ঘটনার মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদিকে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত অভিযানের প্রশংসা করেছে, অন্যদিকে তারা সরকারের প্রতি তাদের অধিকার ও উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে। বেলুচিস্তানের একজন সমাজকর্মী বলেন, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু আমাদের অধিকারও চাই। সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে নেয়, তাহলে হয়তো এই সহিংসতা বন্ধ হতে পারে।”
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সরকারের উচিত বেলুচ জনগণের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা এবং তাদের উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া। তা না হলে, এই বিদ্রোহ আরও তীব্র হতে পারে এবং দেশের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে।