Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeভাইরালকোথায় পাওয়া যায় ‘আইসক্রিমের দুর্গ’?

কোথায় পাওয়া যায় ‘আইসক্রিমের দুর্গ’?

আইসক্রিম! একটি মিষ্টি নাম, যা শুনলেই গ্রীষ্মের উত্তাপে মনে আসে স্বস্তি। কিন্তু যখন আইসক্রিম একটি দুর্গে পরিণত হয়, তখন তার আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়। সম্প্রতি জাপানের নাগাসাকি শহরের একটি ছোট দোকানে এমনই এক আইসক্রিমের দুর্গ দেখা গেছে, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। এক নজরে দেখে মনে হবে এটি হয়তো কোনও সাধারণ ডেজার্ট, কিন্তু আদতে এটি একটি আর্কিটেকচারাল বিস্ময়, যা সম্পূর্ণ আইসক্রিম, কেক, ফল এবং ক্রিম দিয়ে তৈরি। এর উচ্চতা প্রায় ৩.৯৩ ফুট, যা একটি আকর্ষণীয় কাঠামো হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় বিষয় হয়ে উঠেছে।

নাগাসাকি সিটির এই ছোট্ট দোকানটি এখন রীতিমতো পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ‘আইসক্রিমের দুর্গ’ শুধু খাবার নয়, এটি এখন মানুষের কাছে একটি শৈল্পিক এবং বিনোদনমূলক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী রোকু সান (Roku San) যিনি এই আইসক্রিমের ধারণা নিয়ে আসেন, তিনি জানান, “এই আইসক্রিমের মাধ্যমে আমি মানুষকে শুধু স্বাদ নয়, দর্শনেও একটি নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চেয়েছিলাম।” রোকু সানের এই উদ্ভাবনী আইডিয়া দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায় এবং এখন সারাবিশ্ব থেকে মানুষ এই ‘আইসক্রিম দুর্গ’ দেখতে ভিড় করছে।

Where is the 'Ice Cream Castle'?
Where is the ‘Ice Cream Castle’?

আইসক্রিম দুর্গটি আসলে একটি আর্কিটেকচারাল মডেল, যা বিভিন্ন স্তরে সাজানো হয়েছে। ভেতরে কেকের টুকরো, বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন কলা, স্ট্রবেরি এবং ক্রিমের স্তরে স্তরে সাজানো হয়েছে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো এর বাহ্যিক অংশ, যেখানে চকোলেট, ভ্যানিলা এবং স্ট্রবেরির মতো বিভিন্ন স্বাদের আইসক্রিম রাখা হয়েছে। বড় বড় আইসক্রিমের কন এবং কেকের স্তরের মাধ্যমে একটি দুর্গের মতো দেখতে তৈরি করা হয়েছে।

নাগাসাকি শহরের এই দোকানের মালিক রোকু সান বলেন, “আমার দোকানে আগত অনেকেই শুধু আইসক্রিম খেতে আসেন না, বরং এই দুর্গের ছবি তুলতেও আসেন।” একাধিক পর্যটক জানিয়েছেন, “এটি শুধু খাবার নয়, এটি একটি শিল্পকর্ম যা চোখে দেখার মতো।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন আইসক্রিম দুর্গের ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা লেগেছিল। টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে হাজার হাজার শেয়ার এবং লাইক পেয়েছে এটি।

এই ‘আইসক্রিম দুর্গ’ নাগাসাকি শহরের অর্থনীতিতে এক নতুন ধারা এনেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই দোকানের জনপ্রিয়তার কারণে আশেপাশের দোকানগুলিও লাভবান হচ্ছে। পর্যটকরা যখন এই দোকানে আসেন, তখন স্থানীয় ক্যাফে, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য দোকানেও ভিড় বাড়ে। নাগাসাকি শহরের মেয়র বলেন, “এই ধরনের সৃজনশীল উদ্যোগ শুধু ব্যবসায়ীক দিক থেকে নয়, আমাদের শহরের সংস্কৃতির সাথেও মানানসই। এটি নাগাসাকির জন্য গর্বের বিষয়।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের উদ্ভাবনী ডেজার্ট ভবিষ্যতে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হতে পারে। অনেকেই অনুমান করছেন, জাপানের এই ছোট দোকানের আইডিয়া ভবিষ্যতে বড় বড় শহরগুলোতে নতুন ট্রেন্ড হিসেবে দেখা যেতে পারে। ইতিমধ্যেই জাপানের অনেক শহরে এই ধরনের আইসক্রিম দুর্গের আইডিয়া নকল করা শুরু হয়েছে, এবং বিশেষ বিশেষ রেস্তোরাঁয় আইসক্রিম দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য বানানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অনেক রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী মনে করছেন, এই ধরনের ভিন্নধর্মী ডেজার্ট ভবিষ্যতে তাদের ব্যবসায় নতুন উচ্চতা এনে দিতে পারে।

এই আইসক্রিম দুর্গ শুধু বড়দের নয়, শিশুদের মাঝেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের নিয়ে এই দোকানে আসছেন শুধু এই আইসক্রিম দুর্গ দেখতে। শিশুরা যেমন আনন্দ পাচ্ছে এই আইসক্রিমের ভাস্কর্য দেখে, তেমনি তারা আনন্দের সাথে এটি খাচ্ছেও।

candy castle featuring ice cream

একটি পরিবার জানায়, “আমরা দূর থেকে এসেছি শুধু এই আইসক্রিম দুর্গ দেখতে। আমাদের বাচ্চারাও বেশ উত্তেজিত। এটা এক কথায় অসাধারণ!” দোকানের কর্মীরা জানাচ্ছেন, এই ‘আইসক্রিম দুর্গ’ বিশেষ করে শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যাতে তারা আনন্দের সাথে খেতে পারে এবং এটি একটি আনন্দময় অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়।

বিশ্বব্যাপী আইসক্রিম শিল্পে এমন উদ্ভাবনী ধারার সংযোজন অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক। বর্তমান সময়ে মানুষ শুধু স্বাদের জন্য নয়, অভিজ্ঞতার জন্যও খাবার খেতে আসে। এই ‘আইসক্রিম দুর্গ’ একটি উদাহরণ যা দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে খাবারের মাধ্যমে মানুষকে আনন্দ দেওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের কনসেপ্ট ভবিষ্যতে আরও অনেক রেস্তোরাঁয় দেখা যাবে।

আইসক্রিমের দুর্গ শুধু একটি খাবার নয়, এটি একটি গল্প, একটি শিল্পকর্ম যা মানুষকে মুগ্ধ করছে। নাগাসাকি শহরের এই ছোট্ট দোকানটি বর্তমানে এক বড় আকর্ষণ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের নজর কেড়েছে। জাপানের এই দোকান প্রমাণ করে দিচ্ছে, কিভাবে সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবন খাবারের অভিজ্ঞতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments