Sunday, July 13, 2025
Google search engine
HomeNorth Bengalবৃষ্টির আশায় ‘ব্যাঙ'-এর বিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা

বৃষ্টির আশায় ‘ব্যাঙ’-এর বিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা

Villagers marry ‘frog’ in hopes of rain: দি‌ন শেষে দিন কাঠ ফাটা গরম, উত্তরবঙ্গে বর্ষার কোনো ফোঁটা নেই, আমন চাষের সময় চলে গেছে কিন্তু মাঠ শুয়ে আছে ফেটে যাওয়া মাটিতে। এসব দুশ্চিন্তার মধ্যেই ধুপগুড়ির বারঘরিয়া এলাকার ভেমটিয়াতে এক অদ্ভুত কিন্তু গভীর বিশ্বাসের কারণে গ্রামবাসীরা দুটি ব্যাঙকে বিয়ে দিলেন, যাতে বুঁ‌ন্দ মাত্র বৃষ্টির আর্শীবাদ নামবে। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, বর্ষায় ব্যাঙের কুমকুম আর কেঁদোতের মেলবন্ধন আকাশকে প্রভাবিত করে মেঘকে ভিজিয়ে দেয়। প্রাচীন লোকমতে বলা হয়—“বৃষ্টি হচ্ছে যখন ব্যাঙ কাঁদে”—আর সেই বিশ্বাস থেকেই এই ‘বেঙ্গের বিয়ে’। এ ধরনের প্রথা “ভেকুলি বিয়া” নামে অসম-উত্তরবঙ্গের লোকচর্চায় বিশিষ্ট—এতে ব্যাঙকে মানববিয়ের মতো সাজিয়ে সনাই-বাঁশি-পাঙ্গা দিয়ে পূজা-অর্চনা করা হয় ।

ঘটনাস্থল ভেমটিয়াতে স্থানীয় পুরোহিতের আয়োজনে অন্তত ৫০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বর হচ্ছিল বারঘরিয়ার ব্যাঙ, বধু ভেমটিয়ার জেলে পাড়ার। মন্ত্রপাঠ ও সানাইয়ের সুরে শুরু হয় গায়ে হলুদ—পরে মন পোড়া-red দাগের সৌ-লাল চেলি, সিঁদুর আর ফুল দিয়ে সজ্জিত নবদম্পতির পুজো সম্পন্ন হয়। গ্রামের বুড়ো মহিলারা “উলুলু” বা “উলুলুদ্বানি” দিয়ে উৎসবকে আরও মাত্রা দেন । পুরোহিত বলেন, “বরুণ দেবতা খুশি হলে আকাশ খুলে দেবেন”।বিয়েতে “বিবাহ ভুরিভোজ” এর আয়োজনও ছিল, যেখানে গ্রামের সবার জন্য মিষ্টি-ঝাল মিশ্রিত ভোজন চলল। মুলত, মানুষ শুধু বৃষ্টি চাইছেন না—একসাথে ভোজন-আনন্দ নিয়ে মানসিক প্রশান্তির মধ্য দিয়ে ঘরোয়া উদযাপন করছেন। এক স্থানীয় কৃষক বলেন, “ধানের চারা লাগাতে পারছি না, জমি শুকনো, ব্যাঙের এই বিয়ে অন্তত মনকে প্রফুল্ল করে।” অন্য একজন মহিলা বলেন, “আমাদের গ্রামের কথা ছড়িয়ে পড়লে পাশের অনেক গ্রাম থেকেও মানুষ এখানে আসে—এইটা এক সামাজিক বন্ধনও। এ কথা সত্যি, বৃষ্টির সময়ই ব্যাঙের কলরব শুরু হয়, তাই উৎসবে সেই কান্ডপালনের ধর্ম থাকে।

frog 1

গ্রামবাসীদের জন্য যেখানে চাষই জীবিকা—সেখানে যখন বৃষ্টি দেরি, তখন প্রথার চেতনায় মনোবল সামলানো যায়। একইসাথে সামাজিক সংহতি ছড়ায়—জমি-জমিতে ধর্ম-জাত নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে ভোজন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এর ফল—মানসিক চাপ কমে, গ্রামের তরুণ-পুরুষ প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ ফিরে পায়।তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলায়—বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে ক্লাউড সিডিং এর মতো প্রযুক্তি বিকাশ পাচ্ছে; অন্যান্যত্র স্মার্ট ইরিগেশন শোষণ, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিংও বেশি প্রয়োজনীয় । অর্থাৎ, ঐতিহ্য যতই মধুর হোক, বাস্তব সমস্যার সমাধানে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানেও নজর দেয়া জরুরি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments