Vandalism, beatings, tension at CPIM party office in Durgapur:-শনিবার রাতে দুর্গাপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ল। নগর নিগমের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত হর্ষবর্ধন রোডে সিপিআইএম সেক্টর কার্যালয়ে ভাঙচুর, প্রবীণ সদস্যদের মারধর ও গালিগালাজের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনার জেরে সিপিআইএম নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁরা এর বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সিপিআইএমের স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, এই হামলার পেছনে তৃণমূল কংগ্রেসের মদত রয়েছে। জেলা কমিটির সদস্য সিদ্ধার্থ বসু বলেন, “তৃণমূলের শাসনে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। বিরোধী কণ্ঠস্বর দমন করতেই পার্টি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। প্রবীণ সদস্যদের মারধর করা হয়েছে, তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে, চেয়ার-টেবিল ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে, আক্রান্তদের মধ্যে অন্যতম প্রবীণ সিপিআইএম নেতা কমলাকান্ত ঘোষ এই হামলার জন্য তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর পল্লবরঞ্জন নাগকে দায়ী করেছেন। তিনি জানান, “পল্লবরঞ্জন নাগ কয়েকজন মদ্যপ যুবককে সঙ্গে নিয়ে পার্টি অফিসে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা কিছু বোঝার আগেই ভাঙচুর শুরু হয়ে যায়। আমাদের গালিগালাজ করা হয়, হুমকি দেওয়া হয়, এবং পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত প্রাক্তন কাউন্সিলর পল্লবরঞ্জন নাগ হামলার ঘটনা স্বীকার করেছেন তবে তাঁর পাল্টা বক্তব্য, “অনেকদিন ধরেই আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল যে সিপিআইএমের সেক্টর অফিসে জুয়ার আসর বসে। আমরা সেই বিষয়টি নিয়ে সরব হলে ওরা আমাদের ওপর চড়াও হয়। তখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং ধস্তাধস্তি হয়।”
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বাম কর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দুর্গাপুর থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে দোষীদের শাস্তির দাবি তোলেন। পাশাপাশি, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার দুর্গাপুর থানা ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন রাজ্য বামফ্রন্ট সদস্য সিদ্ধার্থ বসু।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনাগুলি আগামী বিধানসভা ও পৌরসভার নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংঘর্ষকে আরও উসকে দিতে পারে। সিপিআইএমের অভিযোগ, তাদের রাজনৈতিক কার্যকলাপ রুদ্ধ করতেই এই হামলা, অন্যদিকে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতেই তাঁরা বিরোধিতা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এই ধরনের সংঘর্ষ শুধু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা রোধ করতে তৎপর হয় পুলিশ।
এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনার তদন্ত কতদূর এগোয় এবং প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়। তবে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ যে আরও চড়বে, তা বলাই বাহুল্য।