Unidentified body recovered from abandoned well in Raniganjরানীগঞ্জের গৌরাঙ্গডাঙা আজ এক ভয়ঙ্কর ঘটনায় কেঁপে উঠেছে। এক পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে অজ্ঞাত এক মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, যা নিয়ে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ফাঁকা জায়গায়, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে একটি কুয়ো পড়ে রয়েছে অযত্নে।বিকেলের মৃদু আলোয় ছোট ছেলেরা খেলতে নেমেছিল ওই মাঠে। হঠাৎ করেই বল গিয়ে পড়ে সেই পরিত্যক্ত কুয়োর ধারে। এক কিশোর যখন বল আনতে যায়, তখনই তার চোখ পড়ে কুয়োর ভেতরের বিভীষিকাময় দৃশ্যে—কিছু একটা জলের ওপরে ভাসছে! প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পারলেও, ভালো করে তাকাতেই সে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ভেতরে একটা বিকৃত মৃতদেহ পড়ে আছে!খবর চাউর হতেই এলাকাবাসী কুয়োর চারপাশে ভিড় জমায়। কেউ কেউ পুলিশে খবর দেন, এবং দ্রুত রানীগঞ্জ পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়ি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি দেখে দমকল বিভাগকে খবর দেওয়া হয়। দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে কুয়োর জল বৃদ্ধি করে এবং দেহটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু সমস্যা একটাই—দেহটি এতটাই বিকৃত যে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়!এই ঘটনায় রহস্য আরও বাড়ে যখন দেখা যায়, কুয়োর জল প্রায় শুকিয়ে গিয়েছিল, তাহলে মৃতদেহটি সেখানে এল কীভাবে? কুয়োর আশপাশে কোনো সন্দেহজনক বস্তুও পাওয়া যায়নি। ফলে পুলিশ নিশ্চিত নয়, এটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, নাকি ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পিত খুন?৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জ্যোতি সিং ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, “এই কুয়ো বহুদিন ধরেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। কিন্তু এভাবে কোনো মৃতদেহ পাওয়া যাবে, তা ভাবতেই পারছি না। পুলিশ তদন্ত করছে, আশা করি দ্রুত সত্য সামনে আসবে।
“রানীগঞ্জ থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে অনুমান, মৃতদেহটি বেশ কয়েকদিন পুরনো। শরীরের বেশিরভাগ অংশ বিকৃত হয়ে গেছে, তাই চেহারা দেখে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তবে তদন্ত চলছে, খুব দ্রুত সব কিছু স্পষ্ট হবে।”স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সম্প্রতি এলাকায় বেশ কিছু অপরাধমূলক কার্যকলাপ বেড়েছে। এই কুয়োর আশপাশে নেশাগ্রস্ত যুবকদের ঘোরাফেরা লক্ষ্য করা গিয়েছিল বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। ফলে এটি কোনো নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু নাকি খুন, সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, এমন পরিত্যক্ত কুয়োগুলো দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, অথচ সেগুলোর মুখ বন্ধ করা হয় না! ফলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।এক স্থানীয় বাসিন্দা বলছেন, “আমরা বহুবার অনুরোধ করেছি, এই কুয়োটি ভরাট করা হোক। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এবার দেখুন, কী ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল!”