Uncomfortably hot with cloudy skies across South Bengal:সকাল থেকে মেঘলা আকাশ আর ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। একদিকে আকাশে কালো মেঘ, অন্যদিকে গরমের দাপট—এই দুইয়ের মিলিত সঙ্গেই যেন ঘামে ভিজছে শহর থেকে গ্রাম। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ—দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় একই ছবি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৬৬ থেকে ৯৫ শতাংশের মধ্যে থাকায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্বস্তি আরও বাড়বে। আর এই পরিস্থিতি বজায় থাকবে অন্তত আগামী পাঁচ দিন। শনিবার সকাল থেকেই শহরের আকাশের মুখ ভার, মাঝে মাঝেই হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে, তবে গরম কমছে না একটুও। কলকাতায় শনিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১.১ ডিগ্রি কম হলেও, অস্বস্তি কিন্তু কমেনি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, শনিবার ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় বিক্ষিপ্ত ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাতে গরমের হাত থেকে স্বস্তি মিলবে না। বরং গরমের সঙ্গেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। সোমবার পর্যন্ত জারি থাকবে ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা।
আবহাওয়াবিদ সোমনাথ মণ্ডল বলছেন, “বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া বেশ আর্দ্র হয়ে উঠেছে। ফলে বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি কাটবে না। তবে ২৮ মে থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। তার প্রভাবে বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বাড়তে পারে।”
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কার্যত ব্যাহত হচ্ছে। অফিসগামী মানুষজন বলছেন, সকালে বেরিয়ে বাস বা অটোতে চড়তেই গায়ের জামা ভিজে যাচ্ছে। দোকানদার মণি ঘোষ জানান, “বিকেলে বৃষ্টি হয়, কিন্তু গরম কমে না। দোকানের শাটার টেনে রাখতে হয়, তবু বাতাস নেই, ভেতরে দম বন্ধ হয়ে আসে।
” একদিকে মেঘলা আকাশ দেখে অনেকে ভাবছেন বৃষ্টি হবে, কিন্তু অন্যদিকে বৃষ্টির পরও বাতাসের বদলে ভ্যাপসা গরম যেন আরও তীব্র হয়ে উঠছে।
প্রতি বছর এই সময়টাতে এমন প্রাক-বর্ষার অস্থিরতা দেখা যায়। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে—যেমন দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ও কলকাতার মতো শহরে—এই মেঘলা-গরম-ঝড়-বৃষ্টি মিশ্রণ যেন নিয়মিত দৃশ্য। তবে এবার বৃষ্টি হলেও গরমে স্বস্তি মিলছে না, বরং বৃষ্টির পরে আরও বেশি ভ্যাপসা লাগছে।
হাওয়া অফিসের এক আধিকারিক বলছেন, “এখনকার বৃষ্টি হচ্ছে বিক্ষিপ্ত প্রকৃতির। দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ অঞ্চলে আকাশে মেঘ থাকবে, কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে, কিন্তু তাতে তাপমাত্রা খুব একটা কমবে না। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে নিয়মিত বর্ষা বৃষ্টি শুরু হতে পারে।”