Two parties clash over sand mining in Jamuria : বালি তোলা নিয়ে ফের উত্তেজনা ছড়াল জামুড়িয়ায়! বেআইনি বালি তোলাকে কেন্দ্র করে এক পক্ষের অভিযোগ আর অন্য পক্ষের পাল্টা প্রতিবাদ—এই নিয়েই উত্তাল হয়ে উঠল আসানসোলের জামুড়িয়া থানার চিচুড়িয়া গ্রামের ডাঙালপাড়া। বুধবার সকালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় গোটা এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, স্থানীয় পুলিশকে এসে হস্তক্ষেপ করতে হয়। গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, এমনকি পথ অবরোধ—সব মিলিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। গ্রামের একাংশের দাবি, অজয় নদ থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা হচ্ছে এবং সেই বালি অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছে। তাই এই কাজের বিরুদ্ধে পথে নামেন গোয়ালা সমাজের এক নেতা নয়ন গোপ এবং তার কয়েকজন সমর্থক। তারা রাস্তা অবরোধ করে বালির গাড়ি আটকে দেন। তাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বেআইনি বালি তোলার কারণে নদীর পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে, যার ফলে কৃষিজমি ধসে যেতে পারে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা সমস্যায় পড়বেন।
কিন্তু গ্রামেরই অন্য একাংশ এই দাবি মানতে নারাজ। তাদের মতে, বালি তোলার কাজ সম্পূর্ণ বৈধ, এবং নয়ন গোপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই বালির গাড়ি আটকে দিচ্ছেন। তার মূল উদ্দেশ্য প্রশাসনের নজর কাড়ার বদলে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি ও টাকা কামানো। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় প্রবল বাদানুবাদ, যা দ্রুতই হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ অবরোধ তুলে দেয় এবং নয়ন গোপকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে, কারণ দুই পক্ষের মধ্যেই তীব্র ক্ষোভ জমে রয়েছে।
এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “বালি তোলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনা হচ্ছে, এবং বেআইনি বালি তোলার বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”স্থানীয় বাসিন্দা হরিদাস মণ্ডল বলেন, “বালি তোলা বন্ধ হলে অনেক পরিবার না খেয়ে মরবে। কিন্তু যদি বেআইনি ভাবে বালি তোলা হয়, তাহলে গ্রাম ও পরিবেশ ধ্বংস হবে। প্রশাসনকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
অন্যদিকে, গ্রামবাসী মাধব ঘোষ বলেন, “নয়ন গোপ যে আন্দোলন করছেন, তা একেবারেই নিজের স্বার্থে। সত্যিই যদি পরিবেশ রক্ষা করাই উদ্দেশ্য হতো, তাহলে এভাবে রাস্তা আটকে মানুষের অসুবিধা করতেন না।”এই ধরনের সংঘর্ষ বারবার হলে গ্রামে অশান্তি বাড়বে, ব্যবসায়ীদের অসুবিধা হবে এবং প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করে।