Friday, June 27, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যপর্যটকদের দেখে আজব কায়দা দুই হস্তীশাবকের

পর্যটকদের দেখে আজব কায়দা দুই হস্তীশাবকের

Two elephant calves show strange behavior when they see tourists: গভীর জঙ্গলের মাঝখানে গাড়ি করে সাফারিতে বেরিয়েছিলেন কিছু পর্যটক। প্রকৃতির মনোরম পরিবেশ উপভোগ করার মুহূর্তেই তারা এমন এক অভাবনীয় দৃশ্যের সাক্ষী হলেন, যা মন ছুঁয়ে গেল সকলের। হঠাৎ করে পর্যটকদের গাড়ির সামনে এসে হাজির হয় দুই দুরন্ত হস্তীশাবক। গাড়ির শব্দ, ক্যামেরার ঝিকিমিকি বা মানুষের ভিড় কিছুই তাদের ভয় দেখাতে পারেনি। বরং, যেন নতুন দর্শক পেয়ে আরও উৎসাহিত হয়ে পড়ে তারা। শুরু করে দিল আজব কায়দা! কখনও মাটিতে বসে পড়ছে, কখনও আবার শুয়ে পড়ছে, কখনও লাফিয়ে লাফিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। পুরো সময়টাতে দুটো হাতির বাচ্চা একে অপরের সঙ্গে খেলা করে, পর্যটকদের মনোরঞ্জন করতে লাগল। গাড়ির মধ্যেই উপস্থিত ছিল একটি নয় বছরের বালক, যে এই অভাবনীয় দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে ফেলে। সেই ভিডিও এখন সমাজমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল। ‘এলিফ্যান্টস অফ ওয়ার্ল্ড’ নামে ইনস্টাগ্রাম পেজে পোস্ট করা এই ভিডিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষাধিক মানুষ দেখে ফেলেছেন। নেটিজেনদের একাংশ এই দৃশ্য দেখে আবেগাপ্লুত, অনেকে আবার মজার ছলে বলেছেন, “দুজনের শরীরী ভাষা যেন বলছে, আমরাও পারফর্ম করতে এসেছি!” যদিও ভিডিওটির সত্যতা ‘খবর বাংলা’ যাচাই করেনি, তবে ভিডিওটি যে আপামর মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটেছে, তা স্পষ্ট। স্থানীয় বনবিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন, “বনাঞ্চলের প্রাণীশাবকরা সাধারণত নির্ভয়ে মানুষের কাছে আসে, যদি তারা আগ্রাসন বা ভয়ের কোনো ইঙ্গিত না পায়। তবে সাবধান থাকা উচিত, কারণ মাতৃহস্তী বা অন্য বয়স্ক হাতিরা যখন কাছাকাছি থাকে, তখন হঠাৎ আক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়।” এই ধরনের মুহূর্তের সৌন্দর্য উপভোগ করলেও পর্যটকদের উদ্দেশে বারবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যেন তারা পশুদের বিরক্ত না করেন বা অতিরিক্ত কাছে না যান। বিশেষ করে, বন্যপ্রাণীদের মধ্যে স্বাভাবিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি, যাতে উভয় পক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে।

বনবিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, হস্তীশাবকেরা এই বয়সে অত্যন্ত কৌতূহলী এবং খেলাধুলায় মেতে থাকে। তাদের মধ্যে সামাজিক বন্ধন গড়ে ওঠে এবং খেলার মাধ্যমে তারা নিজেদের শক্তি ও কৌশল বাড়ানোর প্রশিক্ষণ পায়। পর্যটকদের উপস্থিতি তাদের কাছে এক নতুন ধরণের উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং তারা নিজেদের কিশোরসুলভ আচরণে মেতে ওঠে। এই ঘটনার একটি ইতিবাচক দিকও রয়েছে। মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে এমন নিরীহ ও বন্ধুত্বপূর্ণ মেলামেশা সাধারণ মানুষের মনে বন্যপ্রাণীর প্রতি সহানুভূতি ও সংরক্ষণের সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করে। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই অঞ্চলটি হস্তী সংরক্ষণ প্রকল্পের অধীনে রয়েছে এবং বিশেষ নজরদারি চালানো হয় যাতে পর্যটন এবং বন্যপ্রাণীর জীবনযাত্রার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বন্যপ্রাণীদের প্রতি এই ধরনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবেশ সংরক্ষণের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, সব আনন্দের মাঝেও সতর্কতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন বন আধিকারিকরা।

thumb 271011729920524

অতি উৎসাহী পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত নিয়মাবলী মেনে চলার আবেদন জানানো হয়েছে। এই অনন্য ঘটনার সাক্ষী হয়ে অনেকেই নিজেদের সামাজিক মাধ্যমের পাতায় লিখেছেন, “এটা জীবনের সেরা মুহূর্তগুলির একটি”, “প্রকৃতি যখন আপন করে নেয়, অনুভূতিটাই আলাদা!”। দুই দুরন্ত হস্তীশাবকের কেরামতি শুধু মানুষের মন জয় করেনি, বরং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সুসম্পর্কের এক অনন্য নজির তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে এমন আরও মধুর মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার জন্য এখন থেকেই সকল পর্যটকদের আহ্বান জানানো হচ্ছে, “প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, প্রকৃতির সন্তানদের সম্মান করুন।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments