Trinamool leader shot dead in Malda : মালদার ইংরেজবাজার বৃহস্পতিবার এক অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হলো, যেখানে তৃণমূল নেতা তথা ইংরেজবাজার পৌরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবলা সরকারকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটে নিমাসরাই পাইপ ফ্যাক্টরি মোড় এলাকায়, যখন বাবলা সরকার নিজের ব্যবসার কাজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবলা সরকার গাড়ি থেকে নেমে একটি দোকানে প্রবেশ করার সময় মুখ ঢাকা চারজন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনাটি ঘটেছিল দুপুরবেলা, যখন এলাকাটি যথেষ্ট ব্যস্ত ছিল। দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে গুলি চালায়, যার মধ্যে তিনটি গুলি বাবলা সরকারের দেহে লাগে। একটি গুলি তার মাথা ও গলার মাঝখানে কানের পাশে লাগে, যা তাকে গুরুতরভাবে আহত করে। স্থানীয়রা দ্রুত বাবলা সরকারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে তিনি বর্তমানে সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ঘটনাস্থলে চিৎকার, ভিড় ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দুষ্কৃতীরা হামলার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের পরিচয় জানা যায়নি, তবে স্থানীয়দের মতে, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।
এই ঘটনার সাথে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যোগ রয়েছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বাবলা সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ-সভাপতি, এবং রাজনৈতিকভাবে তিনি অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। মালদার রাজনীতিতে তার গুরুত্ব ছিল যথেষ্ট। তবে এ ঘটনার পেছনে কে বা কারা জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, “এই হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এটি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রমাণ।” অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, “এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। আমরা চাই দোষীরা শাস্তি পাক।”
স্থানীয়দের মতে, মালদার মতো একটি এলাকায় এ ধরনের ঘটনা খুব বিরল। ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এক দোকানদার বলেন, “ঘটনাটি এতটাই হঠাৎ ঘটে যে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। বাবলা দা ভালো মানুষ, আমরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।”
এই ঘটনা মালদার রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি ব্যক্তির উপর হামলা নয়, বরং এটি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক বার্তাও বহন করছে। স্থানীয় রাজনীতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে এবং সম্ভাব্য প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে পুলিশের একটি বিশেষ দল কাজ করছে। তবে, যতক্ষণ পর্যন্ত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত স্থানীয় মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক থেকে যাবে।