Total number of higher secondary examinees in Asansol is 9962 : শুরু হল এক নতুন অধ্যায়! আজ থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আসানসোলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে এবং পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা, চিন্তা, প্রত্যাশা—সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক আবেগঘন পরিবেশ। সকাল থেকেই আসানসোলের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানদের উৎসাহ দিতে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন।
এবারের পরীক্ষায় আসানসোলে মোট ৯৯৬২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। যার মধ্যে ছাত্র ৪৪৭৬ জন এবং ছাত্রী ৫৪৮৬ জন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং করা হয়েছে যাতে কেউ অনৈতিক কোনো উপায় অবলম্বন করতে না পারে।পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য জেলা শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক পরীক্ষক মোতায়েন করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে পুরো প্রক্রিয়া। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য আইডি কার্ড ও অ্যাডমিট কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কোচিং সেন্টারগুলোতে বিগত কয়েক মাস ধরেই পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিয়ে জোর দেওয়া হচ্ছিল। বিশেষ করে, করোনার পরবর্তী সময়ে এই ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, কারণ তারা দীর্ঘদিন অনলাইনে পড়াশোনা করেছে। শিক্ষকদের মতে, এই ব্যাচের পড়ুয়ারা বেশ পরিশ্রমী এবং অনলাইনের অসুবিধা কাটিয়ে তারা নিজেদের প্রস্তুত করেছে।পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাস অ্যাসোসিয়েশন পরীক্ষার দিনগুলিতে বিশেষ পরিষেবা চালু করেছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও বিনামূল্যে বাস পরিষেবা পাবেন, যাতে তারা সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে বাস সংগঠনের এক সদস্য বলেন, “প্রতি বছরই আমরা পরীক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বাস পরিষেবা দিয়ে থাকি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমাদের লক্ষ্য, পরীক্ষার্থীরা যেন কোনো রকম অসুবিধা ছাড়াই পরীক্ষা দিতে পারে।”পরীক্ষার্থীদের মতো অভিভাবকদের মধ্যেও একটা চাপ ছিল স্পষ্ট। একজন অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ে গত এক বছর খুব পরিশ্রম করেছে। ওকে নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। আশা করি, ভালো রেজাল্ট করবে।”আরেকজন অভিভাবক জানান, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুধু একটা পরীক্ষা নয়, এটা ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণ করে দেয়। আমি চাই, সব ছাত্র-ছাত্রী ভালোভাবে পরীক্ষা দিক এবং সাফল্যের শিখরে পৌঁছাক।”
শিক্ষকদের মতে, এই বছরের প্রশ্নপত্রের কাঠামো সহজ ও মধ্যম স্তরের হবে, যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী ভালোভাবে উত্তর দিতে পারে।একজন শিক্ষক বলেন, “আমরা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের যথাসাধ্য সাহায্য করেছি। পরীক্ষার দিনগুলিতে তাদের চাপ না নিয়ে মনোযোগী হতে বলেছি। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আমাদের শুভকামনা রইল।”পরীক্ষার আগে এক পরীক্ষার্থী জানায়, “আমি অনেক পরিশ্রম করেছি, এখন শুধু ভালোভাবে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করছি ভালো ফল করব।”অন্য এক ছাত্রী বলে, “আমি একটু নার্ভাস হলেও আত্মবিশ্বাসী। গত কয়েক মাস ধরে প্রচুর অনুশীলন করেছি, এখন ভালো পরীক্ষা দেওয়াটাই মূল লক্ষ্য।”