Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যএখনও অধরা বাঘিনী জিনাত! আতঙ্কে পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ের বাসিন্দারা

এখনও অধরা বাঘিনী জিনাত! আতঙ্কে পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ের বাসিন্দারা

Tigress Zeenat: পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড় এবং সংলগ্ন এলাকাগুলি বর্তমানে একটি নামেই আতঙ্কিত—বাঘিনী জিনাত। বেশ কিছুদিন ধরে ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা সীমান্তে তার উপস্থিতির খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে সীমান্ত পেরিয়ে এখন সে ঢুকে পড়েছে বাংলার মাটিতে। রাইকা পাহাড় এবং কুইলাপালের গভীর জঙ্গলে তার অবস্থান এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। পুরুলিয়ার এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উধাও।

বনদপ্তর ইতিমধ্যেই অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাঘিনীর গতিবিধির ওপর নজর রাখছে। সূত্রের খবর, রবিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত বাঘিনী তার অবস্থান পাল্টায়নি। বনকর্মীরা দিন-রাত এক করে তাকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ফাঁদ পাতা হয়েছে, এমনকি ছাগলকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।

এই পরিস্থিতি নিয়ে পুরুলিয়া বন বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে বাঘিনীর অবস্থান নির্ণয় করছি। এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে ধরা হবে।”

800px Walking tiger female

তবে আতঙ্ক কমার বদলে আরও বেড়েছে। ঝাড়খণ্ডের একটি গ্রামে বাঘের আক্রমণে এক তরুণের মৃত্যু ইতিমধ্যেই ঘটেছে, যা পুরুলিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের গ্রামের শিশুরা এখন বাইরে খেলতে যেতে ভয় পাচ্ছে। এমনকি আমরা নিজেরাও রাতে ঘর থেকে বেরোতে সাহস পাচ্ছি না।”

পুরুলিয়ার জঙ্গল এবং পাহাড়ি এলাকা জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। তবে বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি যদি জনবসতির কাছাকাছি চলে আসে, তা অনেক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করে। রাইকা পাহাড়ের স্থানীয় মানুষজন এখন দিন কাটাচ্ছেন অজানা ভয়ে।

স্থানীয় প্রশাসন এবং বনদপ্তরের চেষ্টার পাশাপাশি সেন্সিটিভ এলাকাগুলিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এই ধরনের পরিস্থিতি কতদিন চলবে, তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নন। বনদপ্তরের এক কর্মী জানালেন, “বাঘ ধরার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বাঘিনী অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং দ্রুত গতিতে স্থান পরিবর্তন করছে। তাই তাকে ধরা সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ছে।”

পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড় এবং সংলগ্ন জঙ্গলে বাঘিনীর অবাধ বিচরণ শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেই নয়, আশপাশের এলাকাগুলিতেও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঘের গতিবিধি বোঝার জন্য আরও আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন। স্থানীয় এক পরিবেশবিদ বলেন, “এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংঘর্ষ কমানোর জন্য আমাদের আরও পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে।”

অন্যদিকে, বাঘ ধরার এই ঘটনা পর্যটকদের মধ্যেও কৌতূহল জাগিয়েছে। রাইকা পাহাড়ে যারা ঘুরতে আসছেন, তাদের অনেকে বাঘিনীর উপস্থিতি নিয়ে আলোচনায় মগ্ন। যদিও প্রশাসন পর্যটকদের সতর্ক করে দিয়েছে এবং নির্দিষ্ট এলাকাগুলিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।

সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি আবারও প্রমাণ করে যে, বনাঞ্চল এবং জনবসতির মধ্যে একটি সুরক্ষিত সীমারেখা থাকা অত্যন্ত জরুরি। পুরুলিয়ার এই ঘটনা ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। স্থানীয় প্রশাসন এবং বনদপ্তর যেভাবে সমন্বিতভাবে কাজ করছে, তাতে বাঘিনী জিনাতকে ধরা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সকলে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments