This time a hotel is going to open in space:শুধু মহাকাশচারীরা নন, এবার আপনিও মহাকাশ ভ্রমণে যেতে পারবেন। শুনে অবাক লাগলেও, বাস্তবে এমনই একটি অদ্ভুত এবং নজিরবিহীন ঘটনা ঘটতে চলেছে। মহাকাশে খুলতে চলেছে বিশ্বের প্রথম হোটেল! পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে থাকার এবং ভ্রমণের এক অনন্য অভিজ্ঞতা এবার সাধারণ মানুষের জন্যও খুলে যাচ্ছে। এই অবিশ্বাস্য কর্মযজ্ঞের নেপথ্যে রয়েছে Orbital Assembly Corporation (OAC) নামে একটি সংস্থা। তারা জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যেই মহাকাশে বিলাসবহুল হোটেল ‘Voyager Station’ খুলে যাবে, যেখানে একসঙ্গে থাকতে পারবেন ৪০০ জন। ইতিমধ্যেই এই হোটেলের ফার্স্ট লুক প্রকাশ পেয়েছে এবং তা ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে।২০১২ সালেই এই অভিনব প্রকল্পের পরিকল্পনা শুরু করেছিল Orbital Assembly Corporation। মহাকাশে সাধারণ মানুষের থাকার ব্যবস্থা কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার পর তারা বাস্তবে এটি সম্ভব করার লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। এর ফলস্বরূপ তৈরি হচ্ছে ‘Voyager Station’, যা পৃথিবীর প্রথম ‘কমার্শিয়াল স্পেস হোটেল’।
OAC-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহাকাশ ভ্রমণ এবং হোটেলে থাকার বিষয়টি যাতে আর শুধুমাত্র সায়েন্স ফিকশন না থাকে, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।মহাকাশে এই হোটেলের বিলাসবহুল পরিবেশ, অভিনব সুযোগ-সুবিধা এবং সৌন্দর্য চাক্ষুষ করা এক অনন্য অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। OAC জানিয়েছে, এই হোটেল হবে এক বিশাল রিং আকৃতির স্টেশন, যা ধীরে ধীরে ঘুরবে এবং কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণ তৈরি করবে। এর ফলে মহাকাশে ভেসে থাকার অভিজ্ঞতা যেমন পাবেন, তেমনই স্বাভাবিক চলাফেরাও করতে পারবেন।তবে এই মহাকাশ হোটেলে থাকার জন্য খরচ অবশ্যই আকাশছোঁয়া হতে পারে। প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহের থাকার খরচ হতে পারে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৪০ কোটি টাকা। যদিও OAC-এর দাবি, ভবিষ্যতে মহাকাশ ভ্রমণ এবং এই হোটেলে থাকার খরচ কমিয়ে আরও বেশি মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।এই মহাকাশ হোটেলে শুধু পর্যটকরা নয়, গবেষকরাও থাকতে পারবেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এই হোটেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মহাকাশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য একধরনের লাইভ ল্যাবরেটরি হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে এই স্পেস স্টেশনকে।মহাকাশে হোটেল খোলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহের স্রোত শুরু হয়েছে। কেউ ভাবছেন, কবে তারা এই সুযোগ পাবেন, আবার কেউ এই উদ্যোগের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন। কলকাতার আইটি পেশাদার সুমিত দাস বলেন, “মহাকাশে হোটেলের ভাবনা শুনে প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি। যদি ভবিষ্যতে এই ভ্রমণের খরচ কমে যায়, তাহলে আমরাও হয়তো একদিন মহাকাশ ভ্রমণে যেতে পারবো।”যদিও এই উদ্যোগ নিয়ে উৎসাহের পাশাপাশি কিছু উদ্বেগও রয়েছে। পরিবেশবিদ এবং মহাকাশ গবেষকদের মতে, মহাকাশে মানুষের উপস্থিতি এবং বাণিজ্যিক উদ্যোগ বাড়লে মহাকাশ দূষণ (Space Debris) বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। তাই মহাকাশে নতুন প্রকল্প শুরু করার আগে সঠিক পরিকল্পনা এবং পরিবেশ সুরক্ষার দিকটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।