This home remedy will cure migraine problem:বর্তমান ব্যস্ত জীবনযাত্রায় মাইগ্রেন যেন এক অপ্রতিরোধ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে। কর্পোরেট দুনিয়ার অবিরাম চাপ, ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন, ঘুমের ঘাটতি এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস—সব মিলিয়ে এই রোগ ক্রমশই আধুনিক সমাজের এক অশান্ত সহচর হয়ে উঠছে। একসময় যে মাথাব্যথা সাময়িক অসুবিধা বলে মনে করা হতো, তা এখন অনেকের কাছে রোজকার জীবনযাত্রায় বড় প্রতিবন্ধক। ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও।সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এক গুরুত্বপূর্ণ দিক—মাইগ্রেনের প্রকোপ অনেকাংশে কমানো যায় সহজ কিছু ঘরোয়া নিয়ম মেনে চললে। বহু মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ওষুধের ওপর নির্ভর করলেও স্থায়ী উপশম পান না। কিন্তু যারা নিয়মিত যোগা, ধ্যান বা বিশ্রামমূলক কৌশলগুলি অনুশীলন করেন, তাদের মধ্যে এই সমস্যার প্রকোপ তুলনামূলক অনেক কম।বিশেষ করে অতিরিক্ত স্ট্রেস বা চাপ মাইগ্রেনের অন্যতম প্রধান কারণ। সামান্য মানসিক চাপেই অনেকের মাথা ভারী হয়ে যায়, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসে বা বমি ভাব দেখা দেয়।
এই অবস্থায় ওষুধ ছাড়াও ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনেকটাই স্বস্তি এনে দিতে পারে।স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত মাইগ্রেন প্রতিরোধে কোনও নির্দিষ্ট কর্মসূচি ঘোষণা না হলেও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “মাইগ্রেন নিয়ে বহু মানুষ আজ ভুগছেন। আমরা চাই মানুষ প্রথমে ঘরোয়া প্রতিকারের দিকেও নজর দিন। স্বাস্থ্য সচেতনতাই এই রোগ প্রতিরোধের প্রথম ধাপ।”কলকাতার রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা চৈতালি দত্ত, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে মাইগ্রেনে ভুগছেন। তিনি জানান, “আমি নানা ধরনের ওষুধ খেয়ে দেখেছি। কিন্তু কিছুদিন আগে থেকে রোজ সকালে যোগা শুরু করি, আর রাতে ঘুমের রুটিন ঠিক রাখার চেষ্টা করি। এখন মাথাব্যথার পরিমাণ অনেকটাই কম।”একই অভিজ্ঞতা উত্তরপাড়ার শিক্ষক অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্যেরও। তিনি বলেন, “চকোলেট আর কফি বাদ দেওয়ার পর বুঝলাম, এগুলিই ছিল আমার মাইগ্রেন ট্রিগার। এখন নিয়মিত জল খাই, সময়মতো ঘুমোই। মাথা ব্যথা অনেক কমেছে।”বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইগ্রেন রোধে কিছু ঘরোয়া অভ্যাস অত্যন্ত কার্যকর প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত ঘুম—দুটিই মাইগ্রেন বাড়াতে পারে।যোগা, ধ্যান, বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস অনুশীলনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো যায়। এসব নিয়মিত করলে মাইগ্রেনের প্রকোপ অনেকটাই কমে আসে।প্রতিটি মানুষের মাইগ্রেনের ট্রিগার আলাদা। কারও জন্য চকোলেট, ক্যাফেইন, আবার কারও জন্য বিকেল না খেয়ে থাকা মাইগ্রেন ডেকে আনতে পারে। নিজের শরীরকে বোঝা এবং সেই অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস ঠিক করাই সঠিক পদ্ধতি। কপালে বা ঘাড়ের পেছনে ঠান্ডা জলের সেঁক দিলে রক্তনালীগুলির সংকোচন হয়, ফলে মাথাব্যথা কমে আসে।এইসব পদ্ধতিগুলি একত্রে মেনে চললে ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও অনেক কম থাকে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাইগ্রেন একধরনের স্নায়বিক সমস্যা। তবে এটি প্রতিরোধযোগ্য। ভবিষ্যতে একমাত্র চিকিৎসার উপরে নয়, সচেতনতার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। স্কুল-কলেজ, অফিস বা কর্মক্ষেত্রে মাইগ্রেন ও স্ট্রেস সংক্রান্ত সচেতনতা কর্মসূচি চালু করা হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন।এছাড়াও, সরকারি বা বেসরকারি স্তরে বিভিন্ন যোগা ক্লাস, মেডিটেশন ওয়র্কশপ আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়লে মাইগ্রেন প্রতিরোধে ব্যাপক সাফল্য আসবে বলে মত চিকিৎসকদের।



