Sunday, July 27, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যদুর্যোগের বিরাম নেই, রাজ্যের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস

দুর্যোগের বিরাম নেই, রাজ্যের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস

There is no end to the disaster, rain with lightning forecast in several districts of the state:বাংলার আকাশ যেন কিছুতেই স্থির থাকতে চাইছে না। ঘন কালো মেঘ, বজ্রের গর্জন আর হঠাৎ হঠাৎ ঝড়ে ভেসে যাওয়া রাস্তা—এই যেন নিয়মিত ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্প্রতি। নিম্নচাপ একদিকে বিদায় নিলেও, বৃষ্টি যেন পিছু ছাড়ছে না রাজ্যবাসীর। বর্ষাকাল এমনিতেই আবেগের ঋতু, তবে এবছর সেই আবেগ যেন আতঙ্কের ছায়া নিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমী অক্ষরেখা এখনো সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে এবং তার প্রভাবেই রাজ্যের বহু জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি হয়েছে।রবিবার সকালে দক্ষিণবঙ্গের আকাশ ছিল আংশিক মেঘলা। যদিও বৃষ্টি ছিল ছিটেফোঁটা, তবে বিকেল হতেই শুরু হয় হালকা বজ্র-সহ বৃষ্টি। বিশেষত পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনার আকাশে সন্ধ্যা নামতেই দেখা যায় গর্জন-চমকের খেলা। কলকাতা শহরও বাদ যায়নি এই প্রাকৃতিক নাটক থেকে। আজ, অর্থাৎ সোমবার থেকে আবারও বৃষ্টি বাড়বে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।উত্তরবঙ্গের ছবিটাও খুব একটা আলাদা নয়। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বর্ষার এমন প্রবল দাপটে নদী পাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।কলকাতার আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ৮৭ থেকে ১০০ শতাংশ—যা আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তুলছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় শহরের তাপমাত্রা ২৬ থেকে ৩২ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করবে।আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্ক করেছে। কোথাও যদি জল জমে, রাস্তা অবরুদ্ধ হয় বা বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা দেখা দেয়, তার জন্য প্রশাসনকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।

গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা আগেরবারের মতো যাতে না ঘটে, সেই দিকেও নজর দেওয়ার নির্দেশ এসেছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে।পাশাপাশি, কৃষি দপ্তর থেকেও কৃষকদের উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে—যাতে এই অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের ফলে ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। বিশেষ করে আমন ধান চাষের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জল দাঁড়িয়ে থাকলে ফলন মার খেতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।বর্ধমানের এক চাষি বলছেন, “এইরকম ঝড়বৃষ্টি যদি চলতেই থাকে, ধানের চারা তো পচে যাবে। কিছুই করার থাকবে না তখন। গত বছরও এমন হয়েছিল, এবারও যদি তাই হয়, তাহলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।”কলকাতার বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা দে জানান, “বৃষ্টির জন্য একটা দিনের পরিকল্পনাও করা যাচ্ছে না। সকাল রোদ, দুপুরে গুমোট, বিকেলে হঠাৎ ঝড়—এই ধরণের আবহাওয়া শরীরের ওপরেও প্রভাব ফেলছে।”আবহাওয়াবিদদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপ সরে গেলেও মৌসুমী অক্ষরেখা ও সমুদ্রের গ্রীষ্মমন্ডলীয় বায়ু প্রবাহ এখনো সক্রিয় থাকায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া হলেও, অতিরিক্ত জলীয়বাষ্পের ঘনত্ব এবং আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করছে।

Screenshot 2025 06 12 154841

পর্যবেক্ষণ বলছে, জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ গত পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় বেশি। কৃষি, পরিবহণ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাত এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। স্কুলগুলিতে উপস্থিতি কমছে, গ্রামাঞ্চলে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত হয়ে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহে সময়ে সময়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থেকেই যাবে। বিশেষ করে দুপুর এবং সন্ধ্যার দিকে আকাশে ঘন মেঘ জমার প্রবণতা থাকবে। ফলে যাত্রীদের, কৃষকদের এবং ছোট ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।হঠাৎ করে বৃষ্টি নামতে পারে যে কোনও সময়, তাই ছাতা বা রেইনকোট সঙ্গে রাখাই শ্রেয়। প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় জল জমা রোধে আগেভাগেই পাম্প বসানো, নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments