The world will soon run out of water. : জলের আরেক নাম জীবন! কিন্তু যদি বলা হয় এই জীবনদায়ী জলই ক্রমশ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে? গবেষকদের দাবি, বিশ্বজুড়ে পানীয় জলের সংকট ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে, এবং খুব শীঘ্রই পৃথিবী জলশূন্য হয়ে যেতে পারে! পরিবেশবিদদের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, যার ফলে শুধুমাত্র পানীয় জলের সংকটই নয়, বরং পুরো জীবনচক্রই এক ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে।
আমেরিকার একদল গবেষকের গবেষণায় উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য—জল থেকে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমাগত কমে যাচ্ছে! হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সংমিশ্রণে তৈরি জল, কিন্তু গবেষকরা জানিয়েছেন, জল গরম হওয়ার ফলে অক্সিজেন ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। ফলে পানীয় জল সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে চলেছে।এক গবেষক জানান, “জলজ প্রাণিরা তাদের জীবনধারণের জন্য সম্পূর্ণরূপে জলের অক্সিজেনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু জল উষ্ণ হলে এতে অক্সিজেন কমতে শুরু করে, যার ফলে জলজ প্রাণিরা মারা যাচ্ছে।” অর্থাৎ, একদিকে যেমন জলজ প্রাণিরা ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, তেমনই মানুষের পানীয় জলের চাহিদা মেটানো আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
গবেষণা বলছে, বিশ্বের প্রায় ৪০% অঞ্চলে ভয়াবহ পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার অনেক অঞ্চল ইতোমধ্যেই ভয়ঙ্কর খরার কবলে পড়েছে। ভারতেও পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, রাজস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে ইতিমধ্যেই ভূগর্ভস্থ জলস্তর আশঙ্কাজনকভাবে কমতে শুরু করেছে।একজন পরিবেশ গবেষক বলেন, “বর্তমান হারে যদি ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহৃত হতে থাকে এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে থাকে, তাহলে আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে বিশুদ্ধ পানীয় জল সোনার চেয়েও দামী হয়ে উঠবে।”অক্সিজেন কমে গেলে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণিরা মারা যাবে। ফলে সমুদ্র ও নদীর বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে।
চাষাবাদের জন্য প্রচুর পরিমাণে জল প্রয়োজন হয়। কিন্তু জল সংকট হলে কৃষিকাজে বিশাল প্রভাব পড়বে, খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে এবং বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট দেখা দেবে।
পানীয় জলের সংকট দেখা দিলে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশুদ্ধ পানীয় জল দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়বে, যার ফলে একদিকে যেমন রোগব্যাধি বৃদ্ধি পাবে, তেমনই সামাজিক অস্থিরতাও বাড়বে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে জলের অপচয় কমাতে হবে। অপ্রয়োজনে ট্যাপ খোলা রাখা, গাড়ি ধোয়া বা অতিরিক্ত জল ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে তা ভূগর্ভস্থ জলস্তর পুনরায় পূরণ করার উদ্যোগ নিতে হবে।
বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব, যা জল সংকট মোকাবিলায় সাহায্য করবে।
উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে নোনা জলকে মিষ্টি জলে রূপান্তরিত করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।