The venue of the Indian team’s match has changed, do you know why? : ভারতের ফুটবলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভক্তদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দলের পারফরম্যান্স যেমন আলোচনা কেড়েছে, তেমনি ম্যাচ আয়োজন ও অবকাঠামোগত দিকেও পরিবর্তন এসেছে। ২০২৬ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ভারতের প্রতিটি ম্যাচ তাই ভক্তদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। প্রতিপক্ষ যেমন শক্তিশালী, তেমনি মাঠের বাইরের পরিস্থিতিও অনেক সময় ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ভারতের পরবর্তী হোম ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনায় বদল আনে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (AIFF)।
AIFF-এর ঘোষণায় জানা গেছে, ভারতের সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ১৪ অক্টোবরের ম্যাচ বেঙ্গালুরুর বদলে অনুষ্ঠিত হবে গোয়ার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে। এর আগে ৯ অক্টোবর ভারত সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে খেলবে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি ম্যাচে নামবে ব্লু টাইগারস। মূলত স্টেডিয়াম প্রস্তুতির সমস্যার কারণেই এই পরিবর্তন আনতে হয়েছে। কর্নাটক স্টেট ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়াম একাধিক খেলাধুলোর জন্য ব্যবহার করা হয়। ফলে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে ফুটবল ম্যাচের জন্য আলাদা করে প্রস্তুত করতে সময় পাওয়া যায়নি। খুব কম সময়ের নোটিসে ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়ায় সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে।
কর্নাটক স্টেট ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এনএ হ্যারিস খোলাখুলি স্বীকার করেছেন, “শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামকে নানা ধরনের খেলায় ব্যবহার করা হয়। ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের জন্য আলাদা করে মাঠ প্রস্তুত করতে সময় প্রয়োজন। কিন্তু এই ম্যাচটা আমাদের খুব কম সময়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে প্রস্তুতির সুযোগ পাওয়া যায়নি। খারাপ লাগছে ম্যাচটা বেঙ্গালুরু থেকে সরে যাওয়ায়।” AIFF-এর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চায় না তারা। তাই বিকল্প ভেন্যু হিসেবে গোয়ার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
বেঙ্গালুরুর সমর্থকরা স্বাভাবিকভাবেই হতাশ। অনেকেই আগেভাগে টিকিট কেনার পরিকল্পনা করেছিলেন বা শহরে দলের খেলা দেখতে চেয়েছিলেন। শহরের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে এটি বড় ধাক্কা। তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন পর যখন নিজেদের শহরে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সুযোগ এসেছিল, তখন সেই আনন্দ কেড়ে নেওয়া হল। অন্যদিকে গোয়ার ফুটবলপ্রেমীরা এই ঘোষণায় আনন্দে আত্মহারা। গোয়া বরাবরই ভারতীয় ফুটবলের একটি বড় কেন্দ্র। আই-লিগ থেকে আইএসএল—প্রায় সবক্ষেত্রেই গোয়ার ভূমিকা অগ্রগণ্য। এবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পেয়ে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস বেড়ে গেছে বহুগুণে।

ভারতীয় দল বর্তমানে এএফসি এশিয়ান কাপের তৃতীয় রাউন্ডে রয়েছে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে গোলশূন্যে আটকে দেওয়ার পর হংকংয়ের কাছে ০-১ গোলে হারতে হয়েছিল। তখন দলের কোচ ছিলেন মানোলো মার্কেস। কিন্তু পরিবর্তন এসেছে নেতৃত্বে। সিঙ্গাপুর ম্যাচ থেকেই দায়িত্ব নেবেন নতুন কোচ খালিদ জামিল। ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে, ভেন্যু পরিবর্তনের ফলে দলের পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব পড়বে না। তবে মাঠের পরিবেশ, দর্শকের সমর্থন, ভ্রমণ ও আবহাওয়ার মতো বিষয়গুলো প্রভাব ফেলতে পারে। বেঙ্গালুরুর তুলনায় গোয়ায় ফুটবল সংস্কৃতি অনেক গভীর। ফলে পূর্ণ গ্যালারির সামনে খেলার সম্ভাবনাই বেশি। যা খেলোয়াড়দের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।অন্যদিকে, ভারতের ফুটবলে দীর্ঘদিন ধরে যে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, এই ঘটনা আবার সেই প্রশ্ন সামনে নিয়ে এল। আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম থাকা সত্ত্বেও প্রস্তুতির অভাবে ম্যাচ সরিয়ে নিতে হওয়া নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা।
সিঙ্গাপুর ম্যাচ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টানা ম্যাচে পয়েন্ট হারালে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন আরও কঠিন হয়ে যাবে। নতুন কোচ খালিদ জামিলের অধীনে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স কেমন হয়, সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সমর্থকদের আশা, সুনীল ছেত্রী ও তাঁর সতীর্থরা নতুন কৌশলে মাঠে নেমে ভালো ফল করবেন। এছাড়া AIFF-এর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান করা। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি যেন আর তৈরি না হয়, সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।
)
ভারতীয় ফুটবলে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। খেলোয়াড় থেকে শুরু করে কোচিং স্টাফ, প্রতিটি স্তরেই চলছে বদল। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এসেছে ম্যাচ ভেন্যু পরিবর্তনের খবর। হতাশা আছে বেঙ্গালুরুতে, আবার আনন্দ ছড়িয়েছে গোয়ায়। তবে একটাই লক্ষ্য—সিঙ্গাপুরকে হারিয়ে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের পথে এগিয়ে যাওয়া। মাঠে লড়াই হবে, আর গ্যালারিতে সমর্থনের গর্জন—এই মিলনই হয়তো নতুন স্বপ্ন দেখাবে ভারতীয় ফুটবলকে।