The theme of Ramakrishna Vyasa Shiksha Sangha is warming up:এবার রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সংঘের দুর্গাপুজোর থিম “উষ্ণায়ন”। একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক এবং বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে এই থিমের মাধ্যমে আয়োজন করা হয়েছে পরিবেশ রক্ষার বার্তা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং উষ্ণায়নের কারণে যে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে, তা থিমের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে এই পুজোতে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে পরিবেশ দূষণ এবং উষ্ণায়ন আমাদের জীবনের উপর যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে, সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সংঘের এবারের থিম জনসাধারণকে ভাবতে ও সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করছে।উষ্ণায়নের কারণে পরিবেশের মারাত্মক অবনতি ঘটছে এবং এটি ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে, পুজো কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এবারের থিম হবে উষ্ণায়নের প্রভাব। তাদের লক্ষ্য, দর্শকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং উষ্ণায়নের মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
এবারের পুজোতে প্যান্ডেল সজ্জায় উঠে এসেছে বরফ গলে যাওয়া, বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাওয়া এবং অতিরিক্ত গরমের কারণে পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির ছবি। এসব দৃশ্য কল্পনাপ্রসূত নয়, বরং বর্তমান সময়ের বাস্তবতা। প্যান্ডেলটির একাংশে তুলে ধরা হয়েছে বরফ গলে যাওয়া ধ্বংসপ্রাপ্ত পরিবেশের ভয়াবহ চিত্র, যেখানে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হচ্ছে।পুজোর আয়োজন যেমন আনন্দমুখর, তেমনই এটি সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ভাবনার বিষয়ও হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই থিমের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন, “এ ধরনের থিমগুলি মানুষকে সচেতন করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উষ্ণায়ন সম্পর্কে আমরা যত বেশি জানব, ততই আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়বে।” অনেক দর্শক মনে করেন, পুজোর সময় এই ধরনের সচেতনতা মূলক থিম সমাজের প্রতিটি স্তরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সংঘের থিমটি পরিবেশ সচেতনতার প্রচার করার লক্ষ্যে স্থানীয় স্কুল এবং কলেজগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্যান্ডেলটি দেখতে এসেছে এবং থিমের উপর বিভিন্ন আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার এই প্রচেষ্টা বিশেষভাবে সফল হয়েছে। এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই পুজো আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে আমরা পরিবেশের কত বড় ক্ষতি করছি এবং আমাদেরই এটি রক্ষা করার উদ্যোগ নিতে হবে।”এবারের মণ্ডপের সাজসজ্জা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। মণ্ডপের ভিতরে ঢুকলেই দর্শনার্থীরা অনুভব করতে পারবেন প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বায়ু দূষণ, শিল্প কারখানার ধোঁয়া, প্লাস্টিকের ব্যবহার সবই থিমের মধ্যে দিয়ে জীবন্ত রূপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রতিমার পেছনের অংশে বরফ গলে যাওয়ার একটি দৃশ্যপট তৈরি করা হয়েছে, যা দেখে দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হচ্ছেন। প্রতিমার চোখে-মুখেও উঠে এসেছে সেই পরিবেশগত বিপর্যয়ের ছাপ।
এবারের থিমের মাধ্যমে পুজো কমিটি দর্শকদের মধ্যে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে সচেষ্ট হয়েছে। শুধু দুর্গাপুজো নয়, বরং ভবিষ্যতের প্রতিটি সামাজিক উৎসবেও এ ধরনের সচেতনতার বার্তা দেওয়া প্রয়োজন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই এবং আশা করি, আরও অনেক পুজো কমিটি এভাবে সমাজ সচেতনতার বার্তা নিয়ে এগিয়ে আসবে।”পরিবেশ সচেতনতার গুরুত্ব উপলব্ধি করে স্থানীয় প্রশাসনও এই পুজোর থিমকে প্রশংসা করেছে। পরিবেশ দূষণ রোধে সরকার যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে, সেই সব উদ্যোগকেও এই থিমের মাধ্যমে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। প্রশাসন মনে করে, পরিবেশ রক্ষার এই বার্তা সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে দিলে, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে।প্যান্ডেলে আসা দর্শকদের মধ্যেও এই থিমটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এক দর্শক জানান, “এই থিমের মাধ্যমে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরা হয়েছে একটি বাস্তব চিত্র। আমরা প্রতিদিন পরিবেশকে কীভাবে ধ্বংস করছি, তা বুঝতে পারছি।
এবার হয়তো সময় এসেছে আমাদের নিজেদের দায়িত্ব পালন করার।” পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে ওঠার এই বার্তা মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সংঘের এই থিমটি কেবলমাত্র দুর্গাপুজো নয়, বরং সমগ্র সমাজের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা তুলে ধরেছে। উষ্ণায়নের কারণে পৃথিবীর যে ক্ষতি হচ্ছে, তার প্রতিকার শুধুমাত্র সরকারের দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই ধরনের উদ্যোগকে সমর্থন করি এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য একসাথে কাজ করি।