Friday, April 11, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য উত্তরের বারাসতকে টেক্কা দিতে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ বারাসত

 উত্তরের বারাসতকে টেক্কা দিতে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ বারাসত

The South Barast is not behind in any part to beat the North Barast: কালীপুজো মানেই সবার আগে আসে বারাসতের নাম। উত্তর 24 পরগনার বারাসতের কালীপুজো দর্শকদের মন টানে। থিমের অভিনবত্ব থেকে ঝলমলে আলোকসজ্জা, যেন এক অন্য মাত্রা পায় এখানের কালীপুজো প্যান্ডালগুলিতে। কিন্তু উত্তরের বারাসতকে টেক্কা দিতে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ বারাসতও। দক্ষিণ 24 পরগনার দক্ষিণ বারাসত এলাকার বেশ কয়েকটি পুজো থিমের ছোঁয়াতে দর্শকদের মন জয় করছে। এর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ বারাসতের জোরাপুল যুব গোষ্ঠীর শ্যামাপুজো। হীরক জয়ন্তী বর্ষে জোরাপুল যুব গোষ্ঠীর শ্যামাপুজোর ভাবনায় এবার অরণ্যকন্যা। কয়েকবছর ধরেই এই পুজো এলাকার মধ্যে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। নবদ্বীপের শিল্পীরা মণ্ডপে অরণ্যকন্যা ফুটিয়ে তুলেছেন। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই প্রতিমাও তৈরি হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে চন্দননগরের আলোকসজ্জা।

জোরাপুল যুব গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য সঞ্জয় দে বলেন, “আমরা চেষ্টা করেছি বছরের পর বছর এক নতুন থিম নিয়ে আসার। এবারের থিম ‘অরণ্যকন্যা’ আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে চায়। আমরা চাই এই পুজো শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি সামাজিক সচেতনতার একটি মাধ্যমও।” সঞ্জয়ের এই কথায় প্রমাণিত হয়, এই পুজো কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং স্থানীয় সমাজের উন্নয়ন এবং পরিবেশ সচেতনতার প্রতীক।

দক্ষিণ বারাসতের পুজোকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দর্শনার্থীরা আসছেন, এবং তাঁদের মুখে ঝলমলে হাসি ফুটে উঠছে। স্থানীয় মহিলা মীরা ঘোষ জানান, “এবারের কালীপুজো আমাদের কাছে বিশেষ। আমরা আমাদের সমাজের উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি এবং এই পুজোর মাধ্যমে সেই উন্নয়নকে আরো সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।”

এছাড়া, এলাকার ব্যবসায়ীদের জন্যও এই পুজো একটি বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিভিন্ন দোকানে পুজো উপলক্ষে বিশেষ অফার এবং ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী অরূপ মণ্ডল বলেন, “এখনকার সময়ে আমাদের ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখতে হলে পুজোকে কেন্দ্র করে কিভাবে ক্রেতাদের আকর্ষণ করা যায়, সেটি ভেবে দেখতে হয়। এবারের কালীপুজো আমাদের ব্যবসার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

দক্ষিণ বারাসতের কালীপুজো থিম এবং আয়োজনের দিক থেকে সত্যিই উত্তরের বারাসতকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হয়েছে। আগামী দিনে এই ধরনের আয়োজন যদি আরও বৃদ্ধি পায়, তাহলে দক্ষিণ বারাসতও পুজোপ্রেমীদের কাছে সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

Kali 2

এই নতুন উদ্যোগ এবং সংগঠনের মাধ্যমে এলাকার মানুষজনের মধ্যে সংহতি এবং সহযোগিতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, এর ফলে সমাজের অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যোগাযোগ এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেটি একটি স্বাস্থ্যকর সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যদিও অনেকেই এখনও উত্তর বারাসতের কালীপুজোকে প্রধান হিসেবে মনে করেন, কিন্তু দক্ষিণ বারাসতের এই নতুন উদ্যোগ এবং চিন্তাধারা আস্তে আস্তে সবাইকে প্রভাবিত করছে। পুজোর প্যান্ডালে আসা দর্শকদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, “দক্ষিণ বারাসতের পুজো এবার সত্যিই আমাদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।”

এই পুজোর মাধ্যমে দক্ষিণ বারাসতের যুবকরা বুঝিয়ে দিচ্ছে, তাঁরা সামাজিক দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। পরিবেশ রক্ষা এবং সামাজিক সচেতনতার মতো বিষয়গুলোতে তাঁরা অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। পুজোটি শুধু আনন্দের জন্য নয়, বরং একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা।

সত্যিই দক্ষিণ বারাসত ক্রমশ নিজের পরিচিতি গড়ে তুলছে এবং আশা করা যায় ভবিষ্যতে এখানে আরও অনেক নতুন ও অভিনব উদ্যোগ দেখতে পাবো। এটি একটি প্রেরণাদায়ী ঘটনা, যা কেবল ধর্মীয় উৎসবের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের ও উন্নয়নের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠছে।

এই পুজো আয়োজনের মাধ্যমে এক নতুন ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। তাই, আসুন সবাই মিলে আমাদের দক্ষিণ বারাসতকে সমর্থন করি এবং এই আনন্দের উৎসবে অংশগ্রহণ করি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments