The rule of ‘Bonphota’ in exchange for sisters is in Malda:-মালদার গুরুনানক জয়ন্তীর উৎসবের মঞ্চে শুক্রবার সকালে আয়োজিত হল ‘বোনফোটা’। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের পঞ্চম বর্ষপূর্তিতে দিদি-বোনরা একত্রিত হয়ে বোনদের মঙ্গল কামনায় এক বিশেষ কর্মসূচি পালন করেন। মন্ত্রোচ্চারণ এবং প্রার্থনার মাধ্যমে তারা নিজেদের একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। এই অভিনব অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র বোনদের মঙ্গল কামনা নয়, বরং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতীক হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার একটি বার্তাও দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুদেষ্ণা মৈত্র জানালেন, “চার বছর আগে আমরা এই উদ্যোগ শুরু করেছিলাম। আমাদের লক্ষ্য ছিল, সমাজে বোনদের অবস্থান আরও দৃঢ় করা এবং তাদের সুরক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে, তাই দিদি-বোনদের একে অপরের পাশে থাকা এখন সময়ের দাবি।”আরেক অংশগ্রহণকারী বলেন, “ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় যেমন ভাইফোঁটা আছে, তেমনি বোনেদের মঙ্গল কামনায় তেমন কোনো উৎসব নেই। এই চিন্তা থেকেই আমরা ‘বোনফোটা’ আয়োজন করি। এটি শুধু একটি রীতি নয়, বরং নারী-সমাজের মধ্যে সংহতি ও সহমর্মিতার এক প্রতীক।”
‘বোনফোটা’ মূলত এমন একটি উদ্যোগ, যেখানে দিদি-বোনেরা একে অপরের মঙ্গল কামনা করেন এবং তাদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি নেন। এটি একটি সামাজিক বার্তা, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মহিলাদের মধ্যে সংহতি তৈরি করতেই এই ধরনের উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে। এই অনুষ্ঠান শুধু মালদায় সীমাবদ্ধ না রেখে আরও জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন আয়োজকেরা।
মালদার স্থানীয় মানুষদের মতে, এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অনেক মহিলাই জানিয়েছেন, এটি তাদের ভেতরে একটি আত্মবিশ্বাস এবং সুরক্ষার অনুভূতি তৈরি করেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “এমন একটি উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা একে অপরের পাশে আছি, এবং প্রয়োজনে আমরা একসঙ্গে দাঁড়াব।”
এই উদ্যোগ শুধু একটি রীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি মহিলাদের প্রতি সমাজের মনোভাব পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলি দেখে সমাজে এক ধরনের ভীতি এবং অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ‘বোনফোটা’র মতো উদ্যোগগুলি সেই ভীতি কাটিয়ে একটি ইতিবাচক বার্তা দেয়।

মালদার ‘বোনফোটা’ আয়োজনে অংশগ্রহণকারী একজন আইনজীবী বলেন, “এই অনুষ্ঠান আমাদের একটি বার্তা দেয় যে, আমাদের অধিকার এবং সুরক্ষার জন্য নিজেকেই উদ্যোগী হতে হবে। এটি শুধু একটি সামাজিক উৎসব নয়, এটি একটি আন্দোলন।”
‘বোনফোটা’ একটি ছোট উদ্যোগ হলেও এর বার্তা অত্যন্ত শক্তিশালী। এটি সমাজে নারীদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে পারে এবং তাদের প্রতি সম্মান ও নিরাপত্তার বোধ জাগ্রত করতে সহায়ক। আয়োজকদের মতে, ভবিষ্যতে এই উদ্যোগকে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে এবং সমাজের আরও মানুষকে এতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হবে।
মালদার এই অভিনব উদ্যোগ গোটা রাজ্যের কাছে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিদি-বোনদের সংহতি, তাদের মঙ্গল কামনা, এবং একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।