The last rescue is at the speed of a speedboat!:জীবন-মৃত্যুর মাঝে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। চোখের পলকে ঘটে যেতে পারে এমন ঘটনা, যা কোনও সিনেমার চেয়েও বেশি নাটকীয়। সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও সেই রোমাঞ্চের উদাহরণ। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, এক তরুণী স্পিডবোটে চড়ে নদী পার হচ্ছেন। স্পিডবোট চালাচ্ছেন এক ব্যক্তি। তরুণীটি ভয়ে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন চালককে। নদীর চারপাশে ঘন সবুজ জঙ্গল। হঠাৎই সেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে এক বিশাল আকৃতির হিংস্র ভাল্লুক। প্রথমে ভাল্লুকটি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে স্পিডবোটটির দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর আচমকাই তার হিংস্র দৃষ্টি গাঢ় হয়ে ওঠে। জলের ধারে এসে গর্জন করে ওঠে ভাল্লুকটি। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই স্পিডবোটটিকে তাড়া করতে শুরু করে।ভিডিওতে দেখা যায়, ভাল্লুকটি জল পেরিয়ে আসার জন্য পাগলের মতো দৌড়চ্ছে। তার বিশাল শরীর, তীক্ষ্ণ নখ, গর্জন আর বুনো চেহারা—সবকিছু মিলিয়ে এক রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি তৈরি করে। তরুণীর মুখ আতঙ্কে শুকিয়ে গেছে। তিনি পিছনে ফিরে বারবার ভাল্লুকটির দিকে তাকাচ্ছেন।
কিন্তু স্পিডবোটের গতি ক্রমেই বাড়াচ্ছেন চালক। ভাল্লুকটি বেশ কিছুক্ষণ তাড়া করার পর অবশেষে ক্লান্ত হয়ে থেমে যায়। তরুণী বেঁচে গেলেও তার মুখের আতঙ্ক তখনও স্পষ্ট।ভিডিওটি কোথায় ধারণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিডিওটি প্রথমে পোস্ট করা হয়েছিল ‘Nature Is Amazing’ নামক ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে। ক্যাপশনে লেখা ছিল, “প্রকৃতি সুন্দর হলেও, বিপজ্জনকও হতে পারে। জঙ্গলে সতর্ক থাকুন।” ভিডিওটি পোস্ট হওয়ার পরপরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ইতিমধ্যে ভিডিওটি কয়েক লক্ষবার দেখা হয়েছে এবং হাজার হাজার কমেন্ট পড়েছে।ভিডিওটি দেখে নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া যেন থামছেই না। কেউ কেউ মজার ছলে লিখেছেন, “ভাল্লুকটা যেন বলছে—‘এই বোটটা একটু থামাও, আমার লিফট দরকার!’” আবার কেউ কেউ বলছেন, “এটা কোনও সিনেমার দৃশ্য নয় তো?” তবে অনেকেই ভিডিওটি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, “এই ধরনের জায়গায় ভ্রমণ করার আগে প্রাণীজগতের সম্পর্কে ভালো করে জেনে যাওয়া উচিত। এক মুহূর্তের অসাবধানতায় প্রাণও চলে যেতে পারে।’’বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডঃ হর্ষদ গুহ বলছেন, “ভাল্লুক সাধারণত হিংস্র আচরণ করে না, যদি না সে উত্তেজিত বা ভয় পায়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ভাল্লুকটি জঙ্গলের বাইরে চলে এসেছে এবং মানুষ দেখেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। এটি একটি সতর্ক সংকেত।

’’বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বা জঙ্গলে ভ্রমণ করার সময় পর্যটকদের অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। স্পিডবোট বা জলযান ব্যবহার করার সময়ও সাবধান থাকতে হবে। কারণ, বন্যপ্রাণীরা মানুষের আচরণে বিভ্রান্ত হয়ে হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। ভিডিওটি দেখার পর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “ভাল্লুকের প্রাকৃতিক আবাসস্থলে না গিয়ে মানুষজনকে সচেতনভাবে চলাফেরা করতে হবে। প্রাণীদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।”এই ধরনের ঘটনাগুলি সচেতনতার অভাবে ঘটে। স্পিডবোট চালানোর সময় জঙ্গলের ধারে না যাওয়া, খাদ্য বা অন্যান্য জিনিসপত্র ফেলে না রাখা, প্রাণীদের উত্তেজিত না করা—এগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে।ভিডিওটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি আসল না কি কোনও সিনেমার দৃশ্য? কারণ, ভিডিওটি এতটাই নাটকীয় যে অনেকেই এটি এডিটেড বলে দাবি করেছেন। তবে ‘Nature Is Amazing’ পেজটি সাধারণত প্রকৃতির রোমাঞ্চকর মুহূর্ত শেয়ার করে থাকে। যদিও ভিডিওটির সত্যতা এখনো যাচাই করতে পারেনি খবর বাংলা।বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক আচরণ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতি যেমন সুন্দর, তেমনি হিংস্রও হতে পারে। মানুষের অত্যধিক হস্তক্ষেপ বন্যপ্রাণীদের প্রাকৃতিক আচরণকে প্রভাবিত করছে। পর্যটকদের তাই আরও সতর্ক হতে হবে। প্রাণীদের আবাসস্থলে গিয়ে তাদের উত্তেজিত না করাই ভালো।