Saturday, December 6, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যতৃতীয় বর্ষ দুর্গাপুর উৎসবের জাঁকজমকপূর্ণ সূচনা

তৃতীয় বর্ষ দুর্গাপুর উৎসবের জাঁকজমকপূর্ণ সূচনা

The grand start of the third year of Durgapur festival:দুর্গাপুর শহরের সাংস্কৃতিক পরিচিতি সবসময়ই আলাদা। শিল্পনগরীর ব্যস্ততার মাঝেও মানুষ প্রতি বছর উৎসবমুখর আবহে মেতে ওঠে দুর্গাপুর উৎসবকে কেন্দ্র করে। তিন বছর আগে শুরু হওয়া এই উৎসব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পেয়ে শহরের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে পরিণত হয়েছে। তাই উৎসবের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণে নগরবাসীর আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।শুক্রবার ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঐতিহ্যবাহী প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ‘দুর্গাপুর উৎসব ২০২৫’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। উৎসবপ্রাঙ্গণে তখন মানুষের ঢল, আলো-সাজে ঝলমলে পুরো এলাকা, আর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তিন প্রভাবশালী মন্ত্রী—ক্রীড়া ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, আইন, বিচার ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তাঁদের হাতেই সম্পন্ন হয় উৎসবের মূল উদ্বোধন।এই মহাসড়ম্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও হাজির ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্ত, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি ও পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসক পান্নাভলম এস, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী, দুর্গাপুর নগর নিগমের চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়সহ শহরের বিশিষ্টজনেরা।তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করলেও উৎসবের জৌলুস যেন আরও বেড়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে পুরো অনুষ্ঠান।

শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, নাচ-গান, আধুনিকতার ছন্দ এবং জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের জমজমাট পরিবেশনা—সব মিলিয়ে শহরবাসীর জন্য এ বছরও থাকছে এক বিশেষ আকর্ষণ।উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে রাজ্যের তিন মন্ত্রীই শহরের সাংস্কৃতিক চেতনা ও জনগণের সক্রিয় সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে, শিল্পনগরীর উন্নয়ন যেমন চলছে, তেমনই সাংস্কৃতিক বিকাশেও সরকার সমান গুরুত্ব দিচ্ছে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, “দুর্গাপুর উৎসব এখন শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি মানুষের মিলনমেলা। আগামী দিনে আরও বৃহৎ পরিসরে উৎসব করার লক্ষ্য রয়েছে।”উৎসবের প্রথম দিনেই শহরবাসীর প্রতিক্রিয়া উৎসাহব্যঞ্জক। বহু মানুষ জানান, পুরো পরিবার নিয়ে এই কয়েকদিনের অপেক্ষায় থাকেন তারা। কেউ বলেন, “এটাই আমাদের বছরের সবচেয়ে আনন্দের সময়।” আবার কেউ জানান, “দুর্গাপুর উৎসব শহরের পরিচয় হয়ে উঠছে।”দুর্গাপুর উৎসব শুরু হওয়ার পর থেকেই এটি শহরের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে সমানভাবে প্রভাবিত করছে। স্থানীয় শিল্পী ও সংগীতশিল্পীদের জন্য তৈরি হচ্ছে বড় মঞ্চ, শহরে আসছে বাইরের শিল্পীর দল, বাড়ছে দর্শনার্থীর সংখ্যা।

2Q==

উৎসব চলাকালীন খাবারের দোকান, পোশাকের স্টল, হস্তশিল্পের বাজার—সব কিছুর উপরই ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি শহরের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রাণশক্তিকে শক্তিশালী করতে এমন উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।শহর প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছর থেকে আরও বড় আকারে এই উৎসব আয়োজন করা হতে পারে। অতিরিক্ত আসন ব্যবস্থা, দর্শকদের সুবিধার জন্য উন্নত পরিকাঠামো, আরও বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান—সবই ভাবনায় রয়েছে। দর্শক সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা থাকায় নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নও অগ্রাধিকার পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।তৃতীয় বর্ষের দুর্গাপুর উৎসবের সূচনা প্রমাণ করল যে শহরবাসীর আবেগ, উচ্ছ্বাস ও সাংস্কৃতিক মনন কতটা শক্তিশালী। জনপ্রিয়তার নিরিখে এই উৎসব এখন শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, শহরের পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আগামি ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত শহর জুড়ে থাকবে আনন্দের বাতাবরণ, আর অপেক্ষায় থাকবে নাগরিকরা—আগামী বছর উৎসব নতুন কী চমক নিয়ে আসে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments