Thaneda is bringing impeachment for Trump’s abuses : মার্কিন রাজনীতিতে ফের একবার আলোড়ন তুললেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান শ্রী থানেদার, যিনি এবার প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে সাতটি পৃথক ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। মিশিগান রাজ্যের ১৩ নম্বর কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত এই জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, তাঁর এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং এটি মার্কিন সংবিধান, ন্যায়বিচার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিই একটি গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন। থানেদার তাঁর এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারংবার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আমি তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনব।” তিনি উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক বিতর্কিত পদক্ষেপ—যেমন জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিলের উদ্যোগ, স্বাস্থ্যখাতে অনুদান কেটে নেওয়া, মানবিক সহায়তায় রদবদল, এবং আগ্রাসী শুল্কনীতি গ্রহণ—সবই যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের ক্ষতি করেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক নেতিবাচক সঙ্কেত পাঠিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, এসব সিদ্ধান্ত শুধু নীতিগত ভুল নয়, বরং আমেরিকার সংবিধানবিরোধী ও অমানবিক।
এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথমবার ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল ইউক্রেন কেলেঙ্কারি নিয়ে, কিন্তু সেটি সেনেটে আটকে যায়। ২০২১ সালে ক্যাপিটল বিল্ডিং-এ হামলার ঘটনায় দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হয়—এই ঘটনায় তিনি ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি দু’বার ইমপিচ হয়েছিলেন। তবে কোনোটিই চূড়ান্ত বহিষ্কারেগড়ায়নি। এবার শ্রী থানেদার যেসব প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, তার মধ্যে আছে ক্ষমতার অপব্যবহার, সংবিধান লঙ্ঘন, মানবাধিকার হরণ এবং রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোকে দুর্বল করার অভিযোগ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, থানেদারের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র একটি ইমপিচমেন্টের আহ্বান নয়, বরং ট্রাম্পপন্থী রাজনীতির বিরুদ্ধে একটি দৃঢ় প্রতিরোধ—বিশেষত এমন সময়ে যখন ট্রাম্প ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা মনে করছেন, থানেদারের এই পদক্ষেপ নতুন করে দলের মেরুকরণ ও মূল্যবোধের বিষয়গুলো সামনে আনবে, যেখানে মানবিকতা, ন্যায় এবং নাগরিক অধিকারের প্রশ্ন সর্বাগ্রে থাকবে। অন্যদিকে রিপাবলিকান শিবির এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করছে।থানেদার আরও বলেছেন, “এই প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসের সামনে শুধু একটিমাত্র ব্যক্তির বিচার নয়, বরং গণতন্ত্রকে রক্ষা করার প্রতিজ্ঞা।” স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির মতে, তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপের ফলে মিশিগানে থানেদারের জনসমর্থন বৃদ্ধি পেতে পারে, বিশেষত অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে, যাঁরা ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অভিবাসন নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জন ব্রাউন বলছেন, “থানেদারের এই পদক্ষেপে স্পষ্ট যে, এখনকার রাজনীতিতে কেবল পদের জন্য নয়, আদর্শের জন্যও লড়াই হচ্ছে। তাঁর প্রস্তাব যতই কংগ্রেসে সফল হোক বা না হোক, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।” যদিও এই প্রস্তাব কংগ্রেসের দ্বিদলীয় বাস্তবতায় কতটা এগোতে পারবে তা নিয়ে সংশয় থাকছেই, কারণ রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে তা আটকে দিতে পারে।এদিকে সাধারণ আমেরিকানরাও বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন, “আমাদের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এটা জরুরি পদক্ষেপ”, কেউ আবার বলছেন, “পুরনো ঘটনাগুলো নিয়ে বারবার টানাটানি না করে সামনে এগোনো উচিত।” কিন্তু একথা মানতেই হবে, ট্রাম্প নামটি এখনো আমেরিকার রাজনীতিতে একটি ধ্রুব তারার মতো, যাকে ঘিরেই সমর্থন ও বিরোধ—উভয়ই চরমে ওঠে।