Thackeray family reunites over Hindi vs Marathi debate in Maharashtra:মহারাষ্ট্রের রাজনীতি আজ যেন আবেগ, ভাষা আর পারিবারিক পুনর্মিলনের এক যুগান্তকারী মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। হিন্দি বনাম মারাঠি ভাষা বিতর্কের উত্তাপে যখন রাজ্যের রাজনীতি ঝলসে উঠছে, তখনই নতুন মোড় এনে দিল ঠাকরে পরিবারের দুই উত্তরসূরি—উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ ঠাকরের বহু প্রতীক্ষিত পুনর্মিলন। ‘খবর বাংলা’-র প্রতিবেদনে উঠে এলো কীভাবে ভাষা ও সংস্কৃতির প্রশ্নে ঠাকরে পরিবারের এই ঐক্য শুধু রাজনৈতিক ঘটনাই নয়, বরং মারাঠি আত্মপরিচয়ের পুনরুজ্জীবনের বার্তা হয়ে উঠছে গোটা মহারাষ্ট্রবাসীর কাছে।সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের একটি পুরনো ভিডিও, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “মহারাষ্ট্রে আমি মারাঠি, কিন্তু ভারতে একজন হিন্দু।”
বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযুতি সরকার সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের স্কুলগুলিতে হিন্দি ভাষার বাধ্যতামূলক শিক্ষার প্রস্তাব তোলে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে একযোগে সরব হন উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ ঠাকরে—যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পৃথক রাজনীতি করে আসছিলেন, এবং একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনাও করেছেন। কিন্তু ভাষা ও সংস্কৃতির প্রশ্নে তাঁদের মতামত একত্র হয়েছে, আর সেখান থেকেই এক অসাধারণ রাজনৈতিক মুহূর্ত তৈরি হয়েছে। ‘বিজয় মিছিলে’ একসাথে মঞ্চ ভাগ করে নেন দুই তুতো ভাই, একে অপরের হাত ধরে মহারাষ্ট্রবাসীর সামনে এক ঐক্যের বার্তা দেন।এই ঘটনাটি একদিকে যেমন রাজনৈতিক হিসেবনিকেশে হালকা ঝাঁকুনি দিয়েছে, অন্যদিকে আবার হিন্দি বনাম স্থানীয় ভাষার যে ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব, সেটিকেও নতুন মাত্রা দিয়েছে। রাজ ঠাকরে আগে থেকেই পরিচিত তাঁর মারাঠা জাতীয়তাবাদের জন্য। আবার উদ্ধব ঠাকরে, শিবসেনার আধুনিক অবতার হিসেবে মুম্বইয়ের নানা ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করলেও, রাজ্যভাষার গুরুত্ব নিয়ে কখনও আপস করেননি। এবার দুজনের একত্রিত কণ্ঠে রাজ্যবাসী শুনেছে একটাই দাবি—“মারাঠি আমাদের ভাষা, আমাদের গর্ব, ওটা চাপিয়ে দেওয়ার নয়, সেটা হৃদয়ে ধারণ করতে হয়।”

স্থানীয় সাংবাদিক শারদ দেশমুখ জানান, “বাল ঠাকরে যে মারাঠা আবেগের জন্ম দিয়েছিলেন, তা আজও জীবন্ত। এখন সেই আবেগে নতুন করে রং দিল রাজ ও উদ্ধবের মিলন। এটা শুধু ঠাকরে পরিবার নয়, মারাঠা চেতনার পুনরাগমন।”এই প্রসঙ্গে এক অভিভাবক মালতী পাতিল বলেন, “আমার সন্তান মারাঠি স্কুলে পড়ে। হিন্দি আমরা শিখি, জানি। কিন্তু ওকে জোর করে হিন্দি পড়তে বাধ্য করা মানে তার শিকড় কেটে ফেলা।” আরেক শিক্ষিকা কল্পনা কুলকার্নি জানান, “হিন্দি শিখতেই হবে এমন চাপ থাকলে পড়ুয়াদের মনেও বিভ্রান্তি তৈরি হবে। তাদের ভাষাগত গর্ব দুর্বল হয়ে যাবে।”অন্যদিকে, ঠাকরে পরিবারের এই ঐক্যকে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক দেখছেন ভবিষ্যতের বৃহত্তর জোটের সূচনা হিসেবে। যেখানে ঠাকরের দুই শাখা আবার এক হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রে শক্তিশালী আঞ্চলিক ফ্রন্ট গঠনের পথে হাঁটতে পারে। বিশেষ করে লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে বিরোধী জোট রাজনীতিতে এই মিলনের বড় তাৎপর্য থাকবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।