Sunday, April 13, 2025
Google search engine
HomeDurgapujaদুর্গাপুর ব্যারেজে তর্পণের ভিড়: ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতার সঙ্গে ভক্তদের ঢল

দুর্গাপুর ব্যারেজে তর্পণের ভিড়: ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতার সঙ্গে ভক্তদের ঢল

Tarpan crowd at Durgapur barrage:মহালয়া উপলক্ষে দুর্গাপুর ব্যারেজে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নেমেছে। রাজ্যের একাধিক নদীর ঘাটের মতোই, দুর্গাপুর ব্যারেজের দামোদর নদতীরেও ভিড় জমিয়েছেন ভক্তরা। প্রতি বছর আশ্বিন মাসের অমাবস্যা তিথিতে মহালয়ার দিন, পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনার্থে মানুষ বৈদিক মন্ত্র পাঠ করে জলদানের মাধ্যমে তর্পণ করে থাকেন। এ বছরও সেই প্রথা মেনে ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে উপস্থিত হয়েছেন তর্পণে অংশ নিতে।দুর্গাপুর ব্যারেজের দামোদর নদের তীরে ভোর থেকেই তর্পণের প্রস্তুতি শুরু হয়।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে কাঁকসা থানার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী ভোর থেকেই নজরদারির কাজ শুরু করে। এ বছর নদীর জলস্তর তুলনামূলকভাবে বেশি থাকার কারণে পুলিশ প্রশাসনের সতর্কতা আরও জোরদার করা হয়েছে। তর্পণ করার সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ঘাটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।দুর্গাপুর ব্যারেজে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করাকে সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য হিসেবে ধরা হয়। এটি শুধু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়, বরং পিতৃপুরুষের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করার একটি মাধ্যম। প্রতি বছরই এই বিশেষ দিনে ভক্তরা নদীতীরে এসে জলদানের মাধ্যমে তর্পণ করেন। বয়স্ক থেকে শুরু করে যুবসমাজ, সবাই মিলেই এই আচার পালন করেন।

tarpan 1

দুর্গাপুরের পাশাপাশি দক্ষিণ 24 পরগনার গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটেও একই চিত্র দেখা গেছে। গঙ্গাসাগরে এবং অন্যান্য নদীতীরবর্তী এলাকায় তর্পণ করতে আসা মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সেখানে পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে আসা ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে সত্ত্বেও ভক্তদের উৎসাহ একটুও কমেনি, বরং মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তারা তর্পণে অংশ নিচ্ছেন।তর্পণ করার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের তরফে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি নদীর ঘাটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং নদীর জলস্তরের উচ্চতা বেশি হওয়ায় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ঘাটগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা তৎক্ষণাৎ মোকাবিলা করা যায়।এই ধরনের বিশাল আয়োজন নিয়ে এলাকার মানুষের উচ্ছ্বাসও লক্ষ্যণীয়। তাদের মতে, ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতা ও সামাজিক ঐক্যের মাধ্যম হিসেবে তর্পণ এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, তর্পণ শুধু ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং পরিবারের পূর্বপুরুষদের প্রতি একটি গভীর শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যম।এবারের মহালয়ায় নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা প্রশংসনীয়, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে আরো নিয়ন্ত্রিত এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। তর্পণ উপলক্ষে এলাকায় স্থানীয় অর্থনীতি ও ব্যবসা ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দোকানপাট, খাবার স্টল, ফুল ও পূজার সামগ্রী বিক্রেতারা ভালো বিক্রির আশা করছেন।দুর্গাপুর ব্যারেজে তর্পণের এই ভিড় দেখিয়ে দেয়, ধর্মীয় সংস্কার ও সামাজিক ঐক্যের এক অসাধারণ মেলবন্ধন। মানুষ যে ভাবে প্রাচীন আচার-অনুষ্ঠানকে ধারণ করে চলেছেন, তা সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে শক্তিশালী করে তোলে। প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ভক্তদের উচ্ছ্বাস এবং ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতার মধ্যে দিয়ে এবারের তর্পণ সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments