Siliguri Deputy Mayor Attacked: শিলিগুড়ি শহরের হিলকার্ট রোডের সেবক মোড়ে শনিবার রাতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। শিলিগুড়ি পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, যিনি একজন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, এক আত্মীয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ৪-৫ জন দুষ্কৃতী তার গাড়ি আটকে গাড়ির বনেটে কিল-চড় মারতে থাকে। রঞ্জন সরকার প্রতিবাদ করলে তাকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর তিনি দ্রুত পুলিশকে খবর দেন এবং দুষ্কৃতীদের ছবি পাঠান।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ডেপুটি মেয়রের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে এবং রবিবার সকালে দুই যুবককে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে একজন বাঁকুড়ার বাসিন্দা, অন্যজন শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “শিলিগুড়িতে এসব বরদাস্ত করা হবে না।”

রঞ্জন সরকার শিলিগুড়ির রাজনৈতিক মহলে সুপরিচিত। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তার বিরুদ্ধে দেড় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন। রঞ্জন সরকার এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুমকি দেন। তিনি বলেন, “ওঁদের হাতে ইডি, সিবিআই রয়েছে। প্রমাণ থাকলে সামনে আনুক, না হলে ক্ষমা চাইতে হবে।”
এই হামলার ঘটনা শিলিগুড়ির রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা শহরের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করতে পারে। স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অমিত দে বলেন, “শহরের একজন উচ্চপদস্থ জনপ্রতিনিধির উপর এ ধরনের হামলা আমাদের সকলের জন্য উদ্বেগের বিষয়। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানাই।”
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, “আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা মূল ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”
এই ঘটনার পর শিলিগুড়ির সাধারণ মানুষও উদ্বিগ্ন। স্থানীয় বাসিন্দা মীনা দাস বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষ যদি আমাদের জনপ্রতিনিধিদেরই নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।”
এই হামলার ঘটনা শিলিগুড়ির রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা শহরের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করতে পারে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুমন চক্রবর্তী বলেন, “এই ধরনের হামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে হতে পারে। তবে প্রশাসনের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।”
শিলিগুড়ির সাধারণ মানুষ এখন প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তারা আশা করছেন, দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং দোষীরা শাস্তি পাবে। শহরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপই এখন সময়ের দাবি।