Sheikh Mujibur Rahman’s house in Dhanmondi 32 demolished:বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বেদনাদায়ক অধ্যায়ের সূচনা হলো, যখন রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এই বাড়িটি, যেখানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন, পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত হয় এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গতকাল বিকেলে একটি উত্তেজিত জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা বাড়ির বিভিন্ন তলায় ভাঙচুর চালায় এবং পরে পুরো ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া, বাড়ির সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতেও ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনার ফলে বাড়ির অভ্যন্তরে থাকা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত অনেক মূল্যবান সামগ্রী ধ্বংস হয়েছে।এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, দেশের বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হামলাকে দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত। আমরা এর সঠিক বিচার নিশ্চিত করব।”স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার পর গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ধানমন্ডি এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, “এই বাড়িটি আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের অংশ। এভাবে ধ্বংস করা আমাদের হৃদয়ে আঘাত করেছে।”বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের হামলা দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা ও ঐক্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদা আক্তার বলেন, “এটি শুধু একটি স্থাপনার ওপর হামলা নয়, এটি আমাদের জাতীয় পরিচয় ও ইতিহাসের ওপর আঘাত। এ ধরনের ঘটনা সামাজিক বিভাজন বাড়াতে পারে।”এই ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, “আমরা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি এবং জড়িতদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।”সামাজিক মাধ্যমেও এই ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে এই হামলার ভিডিও ও ছবি শেয়ার করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

“আমাদের ইতিহাসের ওপর এ ধরনের আঘাত মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে।ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা ঐতিহাসিক স্থাপনা ও স্মৃতিস্তম্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা মনে করেন, দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতীক এসব স্থাপনার সুরক্ষা নিশ্চিত করা জাতীয় দায়িত্ব।