Sheikh Hasina:সোমবার গণভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ-সহ ১৪ দলের শাসকজোটের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটসঙ্গীরা জামাত-ই-ইসলামি ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, সন্ত্রাস দমন ও দেশের জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কাদের বলেন, “বিএনপি, জামাত, ছাত্রদল, জঙ্গিগোষ্ঠী বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের চেষ্টা করছে। তারা সন্ত্রাস চালিয়ে দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। তারা দেশে অস্থির পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেছে। পুলিশ, সাধারণ মানুষকে হত্যা করে দেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। জাতীয় স্বার্থে এই অপশক্তিকে নির্মূল করা প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, “১৪ দলের এই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে সরকার। সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, পড়ুয়াদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে সরকার।”
বৈঠকের পর কাদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সন্ত্রাস দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। দেশের জনগণের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ১৪ দলের নেতৃত্ব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।”
কোটা আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠেছে। এই আন্দোলনের পেছনে বিএনপি ও জামাতের হাত রয়েছে বলে মনে করছে শাসকজোট। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি, জামাত ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবির দেশের স্বার্থ বিরোধী কাজ করছে। তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের শান্তি বিঘ্নিত করতে চায়। পুলিশ ও সাধারণ মানুষকে হত্যার মাধ্যমে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”
এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। আবার কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করতে পারে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের জনগণের সুরক্ষা ও শান্তি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একজন স্থানীয় নাগরিক, আবদুল হক, বলেন, “আমরা আশা করছি, সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। তবে আমরা চাই, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে যেন কোনরকম অবিচার না হয়।” আরেকজন ছাত্রনেতা, সাইফুল ইসলাম, বলেন, “আমরা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি, তবে আমাদের দাবিগুলোও মানা উচিত। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হোক।”
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কেমন হয়, তা সময়ই বলে দেবে। তবে সরকার জানিয়েছে, দেশের জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাস দমন ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপ প্রশংসিত হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে জামাত-ই-ইসলামি ও ইসলামি ছাত্র শিবিরের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে এবং তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর ফলে দেশে সন্ত্রাসের মাত্রা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে এই সিদ্ধান্ত কতটা প্রভাব ফেলবে, তা দেখার অপেক্ষা।
সর্বোপরি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার শাসকজোটের এই পদক্ষেপ দেশের সুরক্ষা ও শান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সাধারণ মানুষ আশা করছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।