Thursday, May 1, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসশান্তি ফেরাতে ফোনালাপ শাহবাজ জয়শঙ্করের

শান্তি ফেরাতে ফোনালাপ শাহবাজ জয়শঙ্করের

Shahbaz Jaishankar’s phone call to restore peace : কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২শে এপ্রিলের সেই ভয়াবহ দিন, যেদিন রক্তে রাঙা হয়েছিল উপত্যকার মাটি, ২৬ জন নিরীহ ভারতীয় পর্যটক প্রাণ হারান এক নির্মম সন্ত্রাসবাদী হামলায়, আর তার রেশে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। সেই ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত, যদিও ইসলামাবাদ সরকার তা অস্বীকার করে। এমন উত্তপ্ত আবহে এবার শান্তির খোঁজে কূটনৈতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে। জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, মহাসচিব উভয় নেতাকে পরিস্থিতির গভীরতা ব্যাখ্যা করে সংযম বজায় রাখার ও সরাসরি সংলাপে বসার পরামর্শ দেন যাতে দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে হঠাৎ সংঘাতের সম্ভাবনা রুখে দেওয়া যায়।

ad9d0eaf643851d61c5ce8d1727924d150ab60fb7f6bad44

এই ফোনালাপের বিষয়বস্তু ছিল সীমান্ত উত্তেজনা হ্রাস, পেহেলগামের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও আন্তর্জাতিক শান্তি বজায় রাখা। গুতেরেসের উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনই এটি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বার্তা বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা স্পষ্ট—সন্ত্রাস ও শান্তি একসঙ্গে চলতে পারে না। পেহেলগামে নিহতদের পরিবারের কান্না এখনো থামেনি। তাঁদের প্রশ্ন—বারবার কেন সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসের শিকার হবেন? কেন তাঁদের সন্তান, বাবা, মা, স্বামী, স্ত্রীরা নিরাপদ নয় এই দেশে?

ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে, বন্ধ করা হয়েছে একাধিক যৌথ উদ্যোগ। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে ‘সিন্ধু জল চুক্তি’ স্থগিতের মতো চরম সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে এবং নিজেদের আকাশসীমা ভারতের বিমানের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ায় এক নতুন সংকট তৈরি করতে পারে। কারণ, সিন্ধু নদীকে ঘিরে কৃষি, পানীয় জল সরবরাহ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্ভরতা রয়েছে উভয় দেশের বহু অঞ্চলের ওপর।

কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পও এই হামলার জেরে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। পেহেলগাম উপত্যকা সাধারণত গ্রীষ্মকালে পর্যটকে ভরে থাকে। কিন্তু এই ঘটনার পরে বহু পর্যটক তাদের ট্রিপ বাতিল করেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, “প্রতি বছর এই সময় হোটেল, গাড়ি বুকিং থাকে একেবারে ফুল, কিন্তু এবার মানুষ আতঙ্কে আসছেন না। লোকসানের মুখে আমরা পড়েছি।”

সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু সম্মানের সঙ্গে। যদি কেউ আমাদের নাগরিকদের ওপর আঘাত করে, তাহলে তার উত্তরও কড়া ভাষায় দেওয়া হবে।” অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা শান্তি ও সংলাপের পক্ষপাতী, তবে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।”

এই টানাপোড়েনের মধ্যে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কিছুটা হলেও আলো জাগাচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটি স্থায়ী শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলেরও সক্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স সহ একাধিক দেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে আহ্বান জানিয়েছে।

তবে এইসব আন্তর্জাতিক উদ্যোগের ফাঁকে ভারতের জনগণের মনে প্রশ্ন—কবে বন্ধ হবে এই সন্ত্রাসের ধারা? আর কতজন প্রাণ হারালে স্থায়ী শান্তির আলো দেখা যাবে? আপাতত পরিস্থিতি খুবই স্পর্শকাতর, এবং দুই দেশের কূটনীতিক মহলে গভীর নজরদারি চালাচ্ছে গোটা বিশ্ব।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments