Several initiatives on land donated by farmers:ধর্মীয় ভাবাবেগ এবং সেবার প্রতি এক অদ্ভুত নিষ্ঠার সাক্ষী থাকল নদীয়ার শান্তিপুর। এখানকার সুত্রাগড় চড় এলাকায় কৃষকের দান করা জমিতেই তৈরি হতে চলেছে এক বৃহৎ মন্দির ও আশ্রম। গঙ্গাসাগর স্বামী বাসুদেবানন্দ তৎসঙ্গ আশ্রমের উদ্যোগে গড়ে উঠছে এই আশ্রম এবং মন্দির, যা স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ইতিমধ্যেই ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে। আজ জমির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে সূচনা হল এই প্রকল্পের।এই মন্দির এবং আশ্রম তৈরির জমি দান করেছেন এক স্থানীয় কৃষক। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ওই কৃষক পরিচিত তাঁর দানশীলতা এবং ধর্মীয় মনোভাবের জন্য। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর মনে ছিল আধ্যাত্মিক সেবা এবং সনাতনী ধর্মের প্রচার-প্রসারের জন্য কিছু করার স্বপ্ন। সেই ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবেই তিনি তাঁর জমি এই আশ্রম এবং মন্দির তৈরির জন্য দান করেছেন। জমি দানের পর আশ্রম কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা একযোগে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য এগিয়ে আসেন।তৎসঙ্গ আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এই আশ্রমে দেবাদিদেব মহাদেবের একটি ধাম প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার নাম রাখা হবে “শান্তিরসরধাম”।
মূলত সংগ্রাম হিসাবে গুরু মহারাজের স্বপ্নাদেশ এবং দৈব বাণী অনুযায়ী এই মন্দির ও আশ্রমের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু আধ্যাত্মিক চর্চা নয়, আশ্রম থেকে বিভিন্ন সেবামূলক কাজও পরিচালিত হবে। বৃক্ষরোপণ, অন্ন দান, বস্ত্র দান, নরনারায়ণ সেবা, আধ্যাত্মিক শিক্ষা দান, ধ্যান এবং পূজা-পাঠ—এসবই হবে এই আশ্রমের প্রধান কার্যক্রম।গতকাল এই আশ্রমে ছিল অধিবাস এবং আজ সকালে গঙ্গা আরতি এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয় নতুন মন্দির গড়ার কাজ। প্রত্যেকটি আচার-অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বর্গীয় ভাবাবেগ এবং উৎসাহ লক্ষ করা গেছে। বহু মানুষ নিজেদের সাধ্যমতো পূজার উপকরণ, নারকেল, ফুল এবং প্রসাদ নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই আশ্রম এবং মন্দির তৈরি হওয়ার পর আমাদের আর গঙ্গাসাগর পর্যন্ত যেতে হবে না। এখানেই আমরা মহাদেবের ধামে পূজো করতে পারব এবং আশ্রমের সেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারব।”তৎসঙ্গ আশ্রমের বর্তমান আচার্য মহারাজ স্বামী প্রণয়নন্দ জি মহারাজ জানিয়েছেন, আগামী ৮ চৈত্রের মধ্যেই এই মন্দিরটির উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তাঁর কথায়, “আমাদের গুরু মহারাজের স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী এই মন্দির এবং আশ্রম তৈরি হচ্ছে। এখানে শুধুমাত্র পূজা-পাঠ নয়, বিভিন্ন সেবামূলক কাজও করা হবে। ভবিষ্যতে আশ্রমের কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে।”এই মন্দির এবং আশ্রম তৈরি হওয়ার ফলে স্থানীয় মানুষের জীবনে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। আধ্যাত্মিক চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি আশ্রমে আয়োজিত সেবামূলক কাজের মাধ্যমে দুঃস্থ এবং গরিব মানুষদের সাহায্য করা হবে। আশ্রম থেকে শিক্ষামূলক কর্মশালা এবং ধ্যান-যোগ প্রশিক্ষণও দেওয়া হতে পারে, যা এলাকার যুবসমাজের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হবে।মন্দির তৈরির কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয় মানুষজন অত্যন্ত খুশি। একজন প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “আমাদের এলাকায় এত সুন্দর একটি মন্দির তৈরি হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। এতদিন আমরা দূরে গিয়ে আশ্রমে যোগ দিতাম, এখন নিজের এলাকাতেই আধ্যাত্মিক চর্চা করতে পারব।”অন্যদিকে, অনেকেই আশ্রম কর্তৃপক্ষের সেবামূলক কাজের প্রশংসা করেছেন। এক মহিলা বলেন, “আমি শুনেছি এখানে ধ্যান এবং যোগের ক্লাস হবে। আমরা খুবই উপকৃত হব।