...
Thursday, April 3, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য মাউন্ট এভারেস্টের থেকেও ১০০ গুণ উঁচু পর্বতের খোঁজ

 মাউন্ট এভারেস্টের থেকেও ১০০ গুণ উঁচু পর্বতের খোঁজ

Search for a mountain 100 times higher than Mount Everest: পৃথিবীর অভ্যন্তরে, আমাদের পার নিচেই লুকিয়ে আছে এক অবিশ্বাস্য রহস্য। বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় এমন দুটি পর্বতের খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলোর উচ্চতা মাউন্ট এভারেস্টের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি। যেখানে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা প্রায় ৮.৮ কিলোমিটার, সেখানে এই পর্বতগুলোর উচ্চতা প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার। এই চমকপ্রদ তথ্যটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল নেচারে, যা বিজ্ঞানী মহলে নতুন জিজ্ঞাসার সঞ্চার করেছে।এই পর্বতগুলো আফ্রিকা এবং প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে, পৃথিবীর কেন্দ্র এবং ম্যান্টলের সংযোগস্থলে অবস্থান করছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই পর্বতগুলো পৃথিবীর গঠন প্রক্রিয়ার প্রথম দিক থেকেই, অর্থাৎ প্রায় চার বিলিয়ন বছর ধরে একই স্থানে অবস্থিত। গবেষণা দলের প্রধান, ডাচ ভূকম্পন বিশেষজ্ঞ ড. আরওয়েন ডিউস বলেন, “এই পর্বতগুলো কীভাবে তৈরি হয়েছে বা সেগুলো অস্থায়ী নাকি কোটি কোটি বছর ধরে একই অবস্থানে রয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এর অস্তিত্ব আমাদের পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ইতিহাসের অনেক অজানা অধ্যায় উন্মোচন করতে সাহায্য করবে।”

বিজ্ঞানীরা সাবডাকশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই পর্বতগুলোর অবস্থান নির্ধারণ করেছেন। সাবডাকশন প্রক্রিয়ায় একটি টেকটোনিক প্লেট অন্য প্লেটের নিচে সরে গিয়ে প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার গভীরে জমা হয়। এই অঞ্চলেই রয়েছে সেই বিশালাকার ‘টেকটোনিক সমাধিক্ষেত্র’, যেখানে এই পর্বত দুটি অবস্থিত। ভূমিকম্পের সময় সৃষ্ট কম্পন তরঙ্গের গতি হঠাৎ ধীর হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে এই পর্বতগুলোর অস্তিত্ব প্রথম শনাক্ত করা হয়। ড. ডিউস জানান, “আমরা লক্ষ্য করেছি, এই নির্দিষ্ট এলাকায় ভূকম্পন তরঙ্গের গতি কমে যায়। এই অস্বাভাবিক ঘটনাই আমাদের এই বিস্ময়কর আবিষ্কারের দিকে নিয়ে যায়।”গবেষণায় দেখা গেছে, এই পর্বতগুলো আশেপাশের টেকটোনিক প্লেটগুলোর তুলনায় অনেক বেশি উষ্ণ। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, এখানে ভূকম্পন তরঙ্গের শক্তি হারানোর পরিমাণ অনেক কম। গবেষক সুজানিয়া তালাভেরা-সোজা বলেন, “আমাদের প্রত্যাশার বিপরীতে, এই পর্বতগুলিতে তরঙ্গের শক্তি খুব কম নিঃশেষিত হয়, যা একটি বিরল বৈশিষ্ট্য। তবে আশেপাশের ঠাণ্ডা টেকটোনিক সমাধিক্ষেত্রে শক্তি দ্রুত হ্রাস পায়।”

everest.jpg

বিজ্ঞানীদের মতে, এই পর্বতগুলির খনিজ গঠন এবং বিশালাকার দানাগুলো তরঙ্গের শক্তি শোষণ করতে অক্ষম, যা প্রমাণ করে যে এগুলো আশেপাশের অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি পুরোনো। ড. ডিউস আরও বলেন, “এই পর্বতগুলো পৃথিবীর গঠন, টেকটোনিক প্লেটের গতিবিধি এবং ভূমিকম্পের প্রকৃতি বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচন করবে।”এই আবিষ্কার শুধু ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় নয়, বরং মানব সভ্যতার কৌতূহল মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি আমাদের দেখায় যে, আমাদের পরিচিত পৃথিবীর নীচে কত অজানা, রহস্যময় জগৎ লুকিয়ে আছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই পর্বতগুলির গঠন এবং ইতিহাস আরও ভালোভাবে বোঝা গেলে, পৃথিবীর ভূগর্ভস্থ সম্পদ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.