Scientists have explained the reason for not being able to ‘remember’ something:-কেন আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই? কখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মনে রাখার চেষ্টা করলে দেখা যায়, সেটি কিছুক্ষণ পরেই মন থেকে মুছে গেছে। সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশনস পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আমাদের স্মৃতিশক্তির উপর কিছু গঠনমূলক কারণ কাজ করে। এই গবেষণায় জানা গেছে যে, আমাদের স্মৃতিশক্তিতে ‘মাসড স্পেসড এফেক্ট’ নামক একটি বিশেষ প্রভাব রয়েছে, যা স্মৃতি ধরে রাখার উপর প্রভাব বিস্তার করে। সাধারণত কোনো কিছু বারবার পড়লে বা একটানা সময় ধরে করলে তা স্মৃতিতে দীর্ঘক্ষণ থাকে না। বরং যদি কিছুটা সময় বিরতি দিয়ে, অর্থাৎ একবারে না করে ছোট ছোট পর্বে শেখার প্রক্রিয়া চালানো যায়, তাহলে সেই স্মৃতি মস্তিষ্কে দীর্ঘস্থায়ী হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই মাসড স্পেসড এফেক্ট শুধুমাত্র মস্তিষ্কের জন্যই নয়, শরীরের অন্যান্য কোষেও কার্যকর। আমাদের শরীরে মস্তিষ্কের পাশাপাশি অন্যান্য কোষ যেমন- পেশী কোষ, অগ্ন্যাশয় কোষও স্মৃতিশক্তির প্রভাব ফেলতে সক্ষম। এই গবেষণায় প্রথমবারের মতো দেখা হয়েছে, মস্তিষ্ক ছাড়াও অন্যান্য কোষও এই মাসড স্পেসড এফেক্টের ফলে স্মৃতি ধরে রাখতে পারে। গবেষণার নেতৃত্বে থাকা বিজ্ঞানী কুকুশিন বলেন, “স্মৃতির কার্যকারিতা বোঝার জন্য এই গবেষণা নতুন পথ খুলে দিচ্ছে। এটি ভবিষ্যতে আমাদের শেখার প্রক্রিয়ায় এবং স্মৃতিশক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।”
এই গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হতে পারে চিকিৎসা বিজ্ঞানে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই মাসড স্পেসড এফেক্টকে কাজে লাগিয়ে কোষের প্রতিক্রিয়া পরিবর্তন করা সম্ভব হলে চিকিৎসা পদ্ধতিতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। যেমন ধরুন, অগ্ন্যাশয়ের কোষ যদি শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখার জন্য নিজের অভ্যন্তরীণ তথ্য থেকেই কাজ করে, তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এটি বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে।
এই গবেষণা মানবজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই গবেষণার ফলাফল কার্যকর হতে পারে। গবেষণা থেকে বোঝা যায়, কোন তথ্য একবারে বেশি পড়ার চেয়ে সময় নিয়ে ভাগ করে পড়লে তা মস্তিষ্কে দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই শিক্ষার্থীরা যদি তাদের পড়াশোনার পদ্ধতিকে একটু একটু করে ভাগ করে নিতে পারেন, তবে তাদের স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে বলে বিজ্ঞানীদের মতামত।
বিজ্ঞানীদের মতে, স্মৃতি সংরক্ষণে মস্তিষ্কের বাইরের কোষও প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই ভবিষ্যতে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য শরীরের সমস্ত কোষের প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এটি একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গবেষণা, যা শরীরের অন্যান্য কোষকে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করে আমাদের স্মৃতিশক্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে।
এই গবেষণা শুধুমাত্র সাধারণ স্মৃতিশক্তির উন্নয়ন নয়, বরং ভবিষ্যতে স্মৃতিভ্রংশ রোগের প্রতিকারেও নতুন দিশা দেখাতে পারে। মাসড স্পেসড এফেক্টকে কাজে লাগিয়ে কোষের প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির নতুন পথ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। ফলে, এই গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যতের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক বিশেষ দিক নির্দেশ করতে পারে।