...
Thursday, April 3, 2025
Google search engine
Homeরাজনীতিঅন্যানো রাজনীতিফ্রেজারগঞ্জে নদী বাঁধে ধ্বস, আয়লা বাঁধের দাবি এলাকাবাসীর

ফ্রেজারগঞ্জে নদী বাঁধে ধ্বস, আয়লা বাঁধের দাবি এলাকাবাসীর

River dam collapse in Fraserganj, locals demand Ayala dam: দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের ঐতিহাসিক ফ্রেজারগঞ্জ এবং জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বকখালিতে নদী বাঁধে ভয়াবহ ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। গত ২-৩ দিন ধরে এই ভাঙন ক্রমেই তীব্রতর হয়েছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদেরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বাঁধ ভাঙনের ফলে নদীর জল ক্রমেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এলাকাবাসী দ্রুত আয়লা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।ফ্রেজারগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক এবং পর্যটন মানচিত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য স্থান। এই এলাকার নামকরণ হয়েছিল ফ্রেজার সাহেবের নামানুসারে, যিনি এখানে একটি বাংলো তৈরি করেছিলেন। তবে নদী বাঁধে ধ্বস নামার ফলে ফ্রেজারগঞ্জ এবং বকখালির বিস্তীর্ণ অংশ ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ নস্কর বলেন, “বাঁধ ভেঙে গেলে আমাদের বাড়ি-ঘর আর ফসলি জমি সব কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে। এখনই আয়লা বাঁধ তৈরি না করলে আরও বড় বিপর্যয় আসবে।”বাঁধ ধ্বসের প্রধান কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা উঠে আসছে। দক্ষিণবঙ্গের এই উপকূলবর্তী এলাকায় নদীর জলোচ্ছ্বাস এবং প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধ ধ্বংস হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁধের সুরক্ষা ব্যবস্থা অনেক আগেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তবে সমস্যাটি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত থাকায় এখন তা বড় বিপদে পরিণত হয়েছে।বাঁধ ধ্বসের খবর পেয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতিমধ্যেই নদীর বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে এবং কিছু জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান শিখা দাস জানান, “বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ আমরা শুরু করেছি। তবে আয়লা বাঁধ নির্মাণ না হলে এই সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়।”

1606270099 5fbdbc932002a collapsed dam

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, সমস্যাটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কৃষক বিজয় মণ্ডল বলেন, “প্রতি বছর আমাদের বাঁধ ভাঙনের ভয়ে থাকতে হয়। এবার সরকার যদি আয়লা বাঁধ না বানায়, তাহলে আমাদের গ্রাম ধ্বংস হয়ে যাবে।”বাঁধ ধ্বসের ফলে স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমি এবং মৎস্যজীবীদের জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য কেষ্ট বেরা বলেন, “নদীর জল ঢুকে পড়ায় আমাদের মাছের খামার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে আমাদের উপার্জনের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”

পাশাপাশি, ফ্রেজারগঞ্জ ও বকখালি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হওয়ায় এই ধ্বস পর্যটনের উপরও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী তাপস পাল জানান, “পর্যটকেরা এখন আসতে ভয় পাচ্ছেন। এটা শুধু আমাদের ব্যবসার ক্ষতি নয়, পুরো এলাকার অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলবে।”স্থানীয়রা মনে করছেন, আয়লা বাঁধ নির্মাণই একমাত্র স্থায়ী সমাধান। ২০০৯ সালে আয়লা ঘূর্ণিঝড়ের পর এই বাঁধের গুরুত্ব স্পষ্ট হয়েছিল। তবে সেই বাঁধ এখনো নির্মিত না হওয়ায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ আরও বেড়েছে। নামখানার বাসিন্দা মাধবী মণ্ডল বলেন, “আমরা বারবার আয়লা বাঁধের দাবি জানিয়েছি। যদি সেই সময় এটি তৈরি হতো, তবে আজ এই বিপদে পড়তে হতো না।”বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং টেকসই কাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। নদী বাঁধের দুর্বলতা দূর করতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্থানীয় মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক জানান, “আমরা আয়লা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প জমা দিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করার চেষ্টা করা হবে।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.