Rishara’s brother-in-law is healthy, says Kalyan Banerjee : রিষড়ার ভূমিপুত্র, বিএসএফ জওয়ান পুর্নম কুমার সাহু, যিনি সম্প্রতি দুর্ঘটনাবশত পাকিস্তানের সীমান্ত অতিক্রম করে সে দেশের রেঞ্জার বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন, তাঁর সুস্থতার খবর জানিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন স্থানীয় মানুষ এবং গোটা বাংলা, আর এই আশার বার্তা দিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বুধবার যখন সাহু ভুল করে সীমান্ত পার করে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন, তখন থেকেই তার খোঁজ নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন পরিবারের সদস্যরা থেকে শুরু করে সমগ্র এলাকাবাসী। এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়, কারণ তার ঠিক পরেই উধমপুরে জঙ্গি হামলায় বাংলার আরেক বীর সন্তান সেনা জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ শহিদ হন, ফলে আবেগ এবং উদ্বেগ দুটোই চরমে পৌঁছে যায় রাজ্যবাসীর মনে।
এই পটভূমিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেল মারফত জানান যে, তিনি বিএসএফের ডিজি-র সাথে সরাসরি কথা বলে জেনেছেন সাহু এখন সুস্থ আছেন এবং তার সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হয়েছে বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে। তবে শুধু সুস্থতা নয়, সাহুর দ্রুত মুক্তি এবং নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য কূটনৈতিক স্তরে একটানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানান সাংসদ। গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রক পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সংলাপে নিযুক্ত হয়েছে, যাতে সাহুকে দ্রুত ফেরত আনা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাহুর পরিবারও প্রতিনিয়ত সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং আশার আলো দেখছেন। এলাকায় সাহুর বন্ধু, প্রতিবেশী ও শুভানুধ্যায়ীরা সাহুর নিরাপত্তার জন্য মন্দিরে পুজো এবং প্রার্থনার আয়োজন করেছেন। সাহুর এই সুস্থ থাকার খবরে রিষড়া শহরে একপ্রকার স্বস্তির আবহ তৈরি হলেও, যতক্ষণ না সাহু নিজে দেশের মাটিতে পা রাখছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত উৎকণ্ঠা পুরোপুরি কাটছে না। রিষড়ার সাধারণ মানুষের কণ্ঠে এখন একটাই দাবি — “আমাদের সাহু ভাইকে শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।”
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টির উপর নজর রাখছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, সীমান্তে নজরদারি আরও কড়া করা হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এধরনের দুর্ঘটনা আর না ঘটে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও স্পষ্ট হল যে, দেশের নিরাপত্তারক্ষীদের প্রতিটি পদক্ষেপ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, আর তাদের সাহসিকতা ও ত্যাগের মূল্য আমরা কতটা উপলব্ধি করি। সাহুর সুস্থতার খবর যেমন আমাদের আনন্দ দেয়, তেমনি তাঁর নিরাপদ প্রত্যাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ স্বস্তি আসবে না—এই কথাই বলছেন রিষড়ার প্রতিটি মানুষ। গোটা ঘটনায় একদিকে যেমন সাহসিকতার গল্প লেখা হচ্ছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কূটনীতির সূক্ষ্ম চালচিত্রও প্রকাশ পাচ্ছে, যেখানে মানবিকতা এবং রাষ্ট্রের মর্যাদা একসাথে চলতে বাধ্য। এখন শুধু অপেক্ষা, কখন সাহুর মুক্তির খবর আসে এবং রিষড়ার এই সন্তান আবার মায়ের মাটিতে পা রাখে। সেই দিন গোটা বাংলার সাথে সাথে দেশও নিশ্চিন্ত হয়ে হাঁফ ছাড়বে।