Thursday, May 1, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যমাসের শুরুতেই স্বস্তি, কমল গ্যাসের দাম

মাসের শুরুতেই স্বস্তি, কমল গ্যাসের দাম

Relief at the beginning of the month, gas prices fall : মে মাসের প্রথম দিনেই শহর কলকাতা থেকে শুরু করে গোটা দেশের ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের জন্য এল এক টুকরো স্বস্তির খবর—আবারও কমল বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম, যার জেরে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন রেস্তোরাঁ মালিক, খাবারের হোটেল চালানো ব্যবসায়ী, ক্যাটারিং ইউনিট এবং ছোট ছোট চায়ের দোকানের মালিকেরা; ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, এইচপিসিএল ও ইন্ডিয়ান অয়েলের তরফে জানানো হয়েছে, ১৯ কেজির বাণিজ্যিক এলপিজি সিলিন্ডারের দাম রাত বারোটা থেকে কমে হয়েছে ১৮৫১.৫০ টাকা, যেখানে এপ্রিল মাসে এই দাম ছিল ১৮৬৮.৫০ টাকা, আর তার আগে মার্চে ছিল ১৯১৩ টাকা—অর্থাৎ দুই মাসে মোট ৬১.৫০ টাকা কমেছে গ্যাসের দাম, যা ব্যবসার দুনিয়ায় বিশেষ করে খাদ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ;

এক কাপ চায়ের দাম থেকে শুরু করে এক প্লেট বিরিয়ানির দাম পর্যন্ত যেখানে গ্যাসের খরচ একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেখানে এই দাম কমার ফলে অনেকেই আবার কিছুটা ন্যায্য মূল্যে খাবার সরবরাহের আশা করছেন; দমদমের এক রেস্তোরাঁ মালিক মনোজ ঘোষ বললেন, “প্রতিমাসে প্রায় ২০-২৫টি সিলিন্ডার লাগে, একেকটাতে ১৭ টাকা করে কমলে অন্ততপক্ষে ৩৫০-৪০০ টাকা বাঁচবে, আর সেটা ছোট ব্যবসার জন্য অনেক কিছু”; তবে এই খবরে খুশির ঢেউ যতটা এসেছে হোটেল বা চায়ের দোকানে, গৃহস্থের মুখে ততটাই হতাশার রেখা—কারণ ১৪.২ কেজির রান্নার গ্যাসের দাম এখনও ৮৭০ টাকাতেই স্থির রয়েছে, আর সেখানে কোনও রকম পরিবর্তন বা স্বস্তি সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আসেনি; রান্নার গ্যাসের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ গৃহবধূ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও, অনেকেই বলছেন “সবাই তো কম খরচে ব্যবসা করতে চাইছে, কিন্তু বাড়ির হেঁশেলে আগুন জ্বালানো কি আর সহজ কাজ?”

Large Image LPG

বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম কিছুটা কমায় বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে, কিন্তু সরকার ঘরোয়া ব্যবহারে সাবসিডি বা দাম নিয়ন্ত্রণের নীতি বজায় রাখতে গিয়ে স্থিতিশীলতা রক্ষা করছে, তাই সেখানে ছাড় দেখা যাচ্ছে না; যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “বর্তমানে রান্নার গ্যাসের দাম স্থির রাখাটাই নীতি, কারণ একটানা ওঠানামা হলে গৃহস্থদের উপর চাপ বাড়বে”—তবে সেই যুক্তিতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন অনেকে; বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে যেখানে বেশিরভাগ মানুষই নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির, সেখানে এক মাসে ৮৭০ টাকা খরচ করে রান্নার গ্যাস কেনা একটা বড় বোঝা; যাদবপুরের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রীতা সরকার বলেন

, “আমরা তো মাসে একটাই সিলিন্ডার টানতে পারি, এখন সেই সিলিন্ডারের দাম যদি তিন অঙ্কেই আটকে থাকে, তাহলে চাল-ডাল বাঁচিয়ে চালাতে হয়”; অন্যদিকে রাজ্যের হোটেল-রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, “গ্যাসের দাম কমলে লাভের অঙ্ক বাড়ে না ঠিকই, তবে ক্ষতির অঙ্কটা অন্তত কমে, তাই এই সামান্য পরিবর্তনটাও অনেক বড় আশার বার্তা”; এর সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা এটাও বলছেন, ভবিষ্যতে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে আবার অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যায়, তাহলে এই দাম কমার ধারা স্থায়ী হবে না, তাই এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে না; পাশাপাশি রাজনৈতিক দিক থেকেও এই ইস্যুতে বিরোধী দলগুলি সরব হয়েছে, তাঁদের প্রশ্ন, “ঘরোয়া গ্যাসের দাম কেন কমছে না? শুধুই কি ব্যবসায়ীদের কথা ভাবা হচ্ছে? নাকি আসন্ন ভোটে একটি শ্রেণিকে খুশি করার চেষ্টা?”

সব মিলিয়ে, মে মাসের শুরুতেই যেমন একদিকে ব্যবসায়ীদের মুখে সামান্য হলেও হাসি ফুটেছে, তেমনি গৃহস্থালি স্তরে স্বস্তির কোনও বার্তা না আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমতে শুরু করেছে—এখন দেখার, সরকার আগামী দিনে কি নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেয় যা সত্যিই সর্বস্তরের মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক হয়ে ওঠে; কারণ একটা কথা স্পষ্ট—গ্যাস এখন আর কেবল রান্নার জ্বালানি নয়, বরং গৃহস্থের বাজেটের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এক গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments