Raksha Kali Puja held in Purba Burdwan following ancient rituals:- পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার অন্তর্গত মধ্যমগ্রামের উত্তর পাড়ায় প্রাচীন রীতি মেনে অনুষ্ঠিত হলো শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মাতার পুজো। এই পুজোকে কেন্দ্র করে এলাকায় সৃষ্টি হয় এক অনন্য আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের পরিবেশ। এলাকাবাসীর বিশ্বাস, মা রক্ষা কালী তাদের সকল বিপদ থেকে রক্ষা করেন। বহু বছর আগে শুরু হওয়া এই পুজো আজও সেই পরম্পরা বজায় রেখে পালিত হচ্ছে।

এই পুজো উপলক্ষে তিন দিন ধরে চলেছে নানা আচার-অনুষ্ঠান। ধুনো পোড়ানো, অষ্ট প্রণামখাটা, হোম যজ্ঞ সহ বিভিন্ন নীতি মেনে পুজো সম্পন্ন হয়। পাশাপাশি, বলিদান প্রথাও রয়েছে এই পুজোতে। গভীর রাতে শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মাতার বিজয়া হয় বহু বাদ্যযন্ত্র সহকারে। পুজোর শেষ রাতে বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউল সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে অনুষ্ঠান পর্বের। এই পুজোকে ঘিরে ৮ থেকে ৮০ সকলেই আনন্দে মেতে ওঠেন।
পুজো উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন নব কুমার সাঁতরা, রবি মাঝি, রাজকুমার মাঝি, প্রদীপ ধারা, সুজয় সাঁতরা, বাপি ধারা সহ ক্লাবের ও বারোয়ারির সকল সদস্য ও ভক্তবৃন্দ। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় পুজো সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এই পুজোর বিশেষত্ব হলো, এটি প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রায় ২০০ বছর আগে পূর্বপুরুষরা স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে এই পুজোর সূচনা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর মাঘ মাসের ২০ তারিখের পর প্রথম মঙ্গলবার এই পুজো হয়ে আসছে।

গ্রামবাসীরা মনে করেন, মা রক্ষা কালী ভীষণ জাগ্রত দেবী। মায়ের কাছে কেউ মানত করলে মূচ্ছ রোগ সহ অনেক রোগ সম্পূর্ণভাবে সেরে যায়। সাহাপুর গ্রামের এটাই বাৎসরিক গ্রাম্য পুজো। এই পুজোর সময় গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন থেকে প্রচুর লোক সমাগম হয়। পুজো উপলক্ষে মেলাও বসে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এই পুজো স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রাচীন রীতিনীতি মেনে এই পুজো পালনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই পুজো আরও বৃহৎ পরিসরে পালিত হবে বলে আশা করা যায়, যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বাড়াবে।