...
Thursday, April 3, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যআবহাওয়াউত্তরে বৃষ্টি অব্যাহত,ব্যারেজগুলি থেকে ছাড়া হচ্ছে জল

উত্তরে বৃষ্টি অব্যাহত,ব্যারেজগুলি থেকে ছাড়া হচ্ছে জল

Rains continue in north : উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ অব্যাহত থাকায় তিস্তা এবং জলঢাকা নদীর অববাহিকায় পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় হয়ে উঠেছে। এনএইচ ৩১ এর জলঢাকা নদীর পাশাপাশি তিস্তার মেখলিগঞ্জ বাংলাদেশ বর্ডার পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় আজও জারি রয়েছে লাল সতর্কতা। পাশাপাশি জলঢাকা নদীতে সংরক্ষিত এলাকায়ও রয়েছে লাল সতর্কতা। অপরদিকে তিস্তা দোমোহানিতে অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা রয়েছে বলে সেন্ট্রাল ফ্ল্যড কন্ট্রোল রুম জলপাইগুড়ি সূত্রে বৃহস্পতিবার সকালে জানা যায়।

গজলডোবা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমলেও, আজ সকাল ছটায় জলপাইগুড়ি গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ছিল ১৩৫২.১০ কিউমেক এবং সকাল ৭ টায় ৮৬১.৪৪ কিউমেক। এর ফলে নিচু এলাকা গুলিতে জল জমার খবর পাওয়া যাচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এলাকার বাসিন্দারা চরম সমস্যায় পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির কারণে তারা কাজকর্মে যেতে পারছেন না, স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেও মন্দা দেখা দিয়েছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “বৃষ্টির কারণে আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রা প্রায় স্থগিত হয়ে পড়েছে। আমাদের ঘরবাড়িতে জল ঢুকে গেছে, খাবার পানির সমস্যা হচ্ছে।”

স্থানীয় প্রশাসন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের কর্মকর্তা জানান, “আমরা নিয়মিতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেসব এলাকায় বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।”

এছাড়াও, কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, তাদের ফসল পানিতে ডুবে গেছে এবং পরবর্তী মৌসুমে চাষাবাদ করতে সমস্যা হবে। এক কৃষক বলেন, “আমাদের ফসল সব পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমরা কীভাবে চাষাবাদ করবো, তা জানি না।”

বন্যার ফলে স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। অনেকেই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসার জন্য ভিড় বেড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, “আমরা বিশেষ সতর্কতা নিচ্ছি এবং রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করছি। তবে সবার আগে নিরাপদ পানীয় জল এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি।”

এমন পরিস্থিতিতে সরকার এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি একযোগে কাজ করছে। ত্রাণ সরবরাহ, আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন এবং জরুরি পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রশাসন তৎপর। সাধারণ মানুষকেও সরকার এবং প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি পুনরাবৃত্তি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। নদীর তীর বাঁধ মজবুত করা, জলনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা এবং নিয়মিতভাবে নদীর প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। এক পরিবেশবিদ বলেন, “আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও শক্তিশালী হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের ওপর পড়ছে এবং আমরা এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

সর্বোপরি, উত্তরবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বৃষ্টি ও বন্যার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী সবাই।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.