Friday, September 19, 2025
Google search engine
HomeNorth Bengalউৎসবের মুখে বৃষ্টির আশঙ্কা, দমকা হাওয়ার সতর্কতা রাজ্যে

উৎসবের মুখে বৃষ্টির আশঙ্কা, দমকা হাওয়ার সতর্কতা রাজ্যে

Rain forecast ahead of festival, gusty wind warning in the state: শারদোৎসব মানেই বাঙালির আবেগের স্রোত। মহালয়ার ঢাকের আওয়াজে শুরু হয় দেবীপক্ষের আনুষ্ঠানিক সূচনা। প্রতিটি ঘরে ঘরে, মণ্ডপে মণ্ডপে তখন সাজসজ্জার শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। তবে উৎসবের এই আনন্দে বারবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় আবহাওয়ার খামখেয়ালি রূপ। প্রতি বছরই কখনও অঝোর বর্ষণ, কখনও ঝোড়ো হাওয়া পুজোর আনন্দকে ম্লান করে দেয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। ভারতের মৌসম ভবন ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, পুজোর মুখে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে নতুন নিম্নচাপ, যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে পশ্চিমবঙ্গসহ পূর্ব ভারতের আবহাওয়ায়।

আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং উড়িষ্যা উপকূল সংলগ্ন অঞ্চল। এর জেরে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় পুজোর প্রথম দিকেই দেখা দিতে পারে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি।মহালয়ার দিনে রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও পুজোর আগের দিনগুলো থেকেই শুরু হতে পারে বৃষ্টির খামখেয়ালি। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ স্থানীয় বৃষ্টি হতে পারে একাধিক জেলায়। বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়িতে ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া। ফলে পাহাড় থেকে সমতল—উভয় অঞ্চলের মানুষকেই আসন্ন বৃষ্টিবিধ্বংসী আবহাওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

Large image rain 5

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসকে সামনে রেখে রাজ্য প্রশাসন ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পথে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দফতর থেকে জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য এবং দমকল বিভাগকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।পুজোর মরসুমে এমন বৃষ্টির পূর্বাভাসে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে যেসব পুজো কমিটি শেষ মুহূর্তে প্রতিমা আনার কাজ বা মণ্ডপ সাজানোর কাজ সারছেন, তাঁদের চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট।

67fc6177623fc guwahati parts of assam experience rain thunderstorms imd predicts unsettled weather to follow 135942120

এক মণ্ডপ কমিটির সদস্যের কথায়, “প্রতিবছরই আমরা আবহাওয়ার চিন্তায় থাকি। এ বছর আবার নিম্নচাপের খবর শুনে দুশ্চিন্তা বেড়ে গেল। তবে আশা করি মা দুর্গার আগমনে সব ভালো হবে।”অন্যদিকে, কৃষক সম্প্রদায়ের একাংশের জন্য এই বৃষ্টির পূর্বাভাস স্বস্তির বার্তাও নিয়ে এসেছে। শরতের এই সময়টায় ধানক্ষেতের জন্য পর্যাপ্ত জল দরকার। তাই অনেকে মনে করছেন, যদি অতিবৃষ্টি না হয় তবে চাষের কাজে এর উপকার হবে। তবে ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া হলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।

680f0a749e0dd weather update 181647156

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, কয়েকদিন আগে সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত এখন পূর্ব বিহার ও সংলগ্ন অঞ্চলের উপর অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে বিপুল পরিমাণ জলীয় বাষ্প স্থলভাগে প্রবেশ করছে। সেই কারণেই উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল।তাপমাত্রার দিক থেকেও কলকাতা ও আশেপাশের অঞ্চলে অস্বস্তি বাড়ছে। শুক্রবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৬৭ থেকে ৯১ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় শহরের তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি থেকে ৩৪ ডিগ্রির মধ্যে থাকতে পারে।বজ্রবিদ্যুৎ এবং দমকা হাওয়ার সঙ্গে মিলিত বৃষ্টিপাত পুজোর ভিড়ভাট্টা ও যানবাহন চলাচলে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে উৎসবের আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে মানুষকে সতর্ক থাকারই পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।

images?q=tbn:ANd9GcS7IWalQ75eL Try1Lajo2m 1r5IInOovdX8N3 EtoKYa CNfQbl7Brd s0ICHzY0sMa9Q&usqp=CAU

বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, নিম্নচাপ যদি আরও শক্তি সঞ্চয় করে তবে তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপও নিতে পারে। যদিও এখনই এমন আশঙ্কা কম, তবে আগামী কয়েকদিনে আবহাওয়ার পরিবর্তন নির্ভর করবে এই নিম্নচাপের গতিপথের উপর।পুজোর মরসুমে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনে এর যথেষ্ট প্রভাব পড়তে পারে। মণ্ডপে ঠাকুর দেখার আনন্দে জলকাদায় ভেজা প্যান্ডেল কিংবা ভিড় সামলাতে বেগ পেতে হতে পারে দর্শনার্থীদের। তবে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও সচেতনতা থাকলে বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব।উৎসব মানেই আনন্দ, তবে আনন্দের সঙ্গে যদি বৃষ্টির বাঁধা এসে দাঁড়ায়, তাহলে তা কষ্টকর হয়ে ওঠে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাসে বোঝা যাচ্ছে, পুজোর মুখে আকাশ মেঘলা থাকবে, সঙ্গে থাকবে বজ্রবিদ্যুৎ ও দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা। উত্তর থেকে দক্ষিণ—প্রায় গোটা রাজ্যই এই সময় প্রভাবিত হতে পারে। ফলে প্রশাসন যেমন সতর্ক, তেমনই সাধারণ মানুষকেও সাবধান থাকতে হবে। মা দুর্গার আগমনে যেন বৃষ্টি আনন্দের পথে বাঁধা না হয়ে দাঁড়ায়—এটাই এখন সবার প্রত্যাশা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments