Railway sanitation workers protest at Asansol station আসানসোল স্টেশনে তীব্র উত্তেজনা! দীর্ঘদিন ধরে চলা বেতন সংক্রান্ত সমস্যার প্রতিবাদে এবার রেলের সাফাই কর্মীরা সরব হলেন। কাজ বন্ধ রেখে আসানসোল স্টেশনের সামনে বিক্ষোভে শামিল হলেন শতাধিক সাফাই কর্মী। তাদের অভিযোগ, নতুন ঠিকাদার সংস্থা বেতন কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।সাফাই কর্মীদের দাবি, আগে তারা মাসে ১২,০০০ টাকা করে বেতন পেতেন, কিন্তু নতুন ঠিকাদার সংস্থা এসে তা কমিয়ে ৯,০০০ টাকা করার কথা বলছে। এছাড়া পিএফ (প্রভিডেন্ট ফান্ড), ইএসআই (ইমপ্লয়িজ স্টেট ইন্স্যুরেন্স) এবং প্রতি মাসে চারটি ছুটির দাবিও জানিয়েছেন তারা।
কর্মীদের বক্তব্য, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তারা এই স্টেশনে কাজ করছেন, অথচ তাদের ন্যায্য পাওনা দেওয়া হচ্ছে না।সাফাই কর্মীদের সুপারভাইজার মলয় রজক জানান, “আমরা শ্রমিক পোর্টাল অনুযায়ী বেতন পাওয়ার কথা। আগে ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার) সাহেব এসে বলেছিলেন যে আমাদের ন্যূনতম ১৫,০০০ টাকা বেতন হওয়া উচিত। অথচ নতুন ঠিকাদার সংস্থা এসে বলছে ৯,০০০ টাকা দেবে। এটা আমরা মানতে পারছি না, তাই কাজ বন্ধ রেখেছি।”কর্মীদের এই বিক্ষোভের ফলে স্টেশনের স্বাভাবিক পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।

প্ল্যাটফর্মে জঞ্জাল পড়ে থাকছে, টয়লেটগুলোর পরিস্থিতিও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। যাত্রীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, স্টেশনের নোংরা পরিবেশের কারণে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।এক যাত্রী বলেন, “আমরা যারা প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াত করি, তাদের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না হয়, তাহলে স্টেশনের পরিবেশ আরও খারাপ হবে।”রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছি এবং দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। কর্মীদের দাবি বিবেচনায় নেওয়া হবে এবং নতুন ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”
তবে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়নি, যার ফলে সাফাই কর্মীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।এই ঘটনায় শ্রমিক সংগঠনগুলিও সরব হয়েছে। স্থানীয় ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা জানিয়েছেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিকে অগ্রাহ্য করা চলবে না। তাদের ন্যূনতম ১২,০০০ টাকা বেতন দিতে হবে এবং পিএফ, ইএসআই-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।”
এদিকে, প্রশাসনের তরফে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও, বাস্তবে তা কতটা কার্যকর হবে, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। শ্রমিকদের বক্তব্য, যতক্ষণ পর্যন্ত লিখিত চুক্তি না হচ্ছে, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে আসানসোল স্টেশনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আরও বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকলে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকিও বাড়বে। অন্যদিকে, কর্মীদের দাবি মেনে না নিলে বড় ধরনের ধর্মঘটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।বর্তমানে আসানসোল স্টেশনজুড়ে বিক্ষোভের আঁচ স্পষ্ট। কর্মীরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে এই সমস্যা আরও গভীর হতে পারে। একদিকে শ্রমিকদের অধিকার, অন্যদিকে যাত্রীদের অসুবিধা—এই দুইয়ের সমাধান কবে হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।