Thursday, September 4, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যভেস্তে যাবে পুজো! বৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের

ভেস্তে যাবে পুজো! বৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের

Puja will be ruined! Meteorological Department predicts rain:বাংলার মানুষের কাছে দুর্গাপুজো কেবল একটি উৎসব নয়, এটি আবেগ, ঐতিহ্য এবং সামাজিক জীবনের অঙ্গ। প্রতি বছর শরৎ আসতেই বাংলার সর্বত্র শুরু হয় এক অন্য রকম উদ্দীপনা। রঙিন আলো, সুরের ঢেউ, আর মণ্ডপে মণ্ডপে শিল্পকর্মের সৃজন যেন সমগ্র সমাজকে একসূত্রে বেঁধে দেয়। তবে এই উৎসবের আনন্দের সঙ্গে প্রকৃতির মেজাজ সবসময়ই বড় ভূমিকা রাখে। ভাদ্র-আশ্বিন মাস মানেই মাঝে মাঝেই হঠাৎ বৃষ্টি, আর এবারও সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এবারের দুর্গাপুজোতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। মৌসুমি বায়ু বিদায় নেবে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, অথচ দুর্গাপুজো পড়ছে সেই সময়ের আগেই। ফলে আকাশে জমা কালো মেঘ উৎসবের আনন্দে ছেদ ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাতেরও আশঙ্কা রয়েছে।
এখনই লাগাতার বর্ষণে ভুগছে দক্ষিণবঙ্গের বহু এলাকা। সকাল-বিকেল বৃষ্টির কারণে পুজোর প্রস্তুতিতে মার খাচ্ছে তাল। কারিগররা বাঁশে কাপড় বাঁধতে পারছেন না, আলো সাজাতে হচ্ছে বারবার থেমে থেমে। অনেক মণ্ডপে এখনো অসম্পূর্ণ কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে বৃষ্টির কারণে।আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা জারি করেছে। তাদের মতে, সোমবার থেকেই ফের বৃষ্টির দাপট বাড়বে।

মৎস্যজীবীদের সাগরে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, কারণ সমুদ্র উত্তাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে পুজোর আগে সাধারণ মানুষের অযথা ভোগান্তি না হয়। তবে আপাতত প্রকৃতির উপরই নির্ভর করছে উৎসবের দিনগুলোর আবহ।কলকাতা থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল—সবখানেই এখন দুশ্চিন্তার ছায়া। উত্তর কলকাতার এক কারিগর জানান,
“গত এক সপ্তাহ ধরে বাঁশের কাজ এগোতে পারছে না। কাপড় ভিজে যাচ্ছে, আলো বসানোর কাজ থমকে আছে। এবার সময়মতো শেষ হবে কিনা তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”শহরের ব্যবসায়ীরাও কম চিন্তিত নন। বৃষ্টি মাথায় করেই যদিও ক্রেতারা বাজারে আসছেন, তবুও দোকানদারদের মনে সংশয়—অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে যদি বৃষ্টি তীব্র হয়, তবে দুর্গাপুজোর আসল ভিড় কমে যাবে না তো? এক ক্রেতা বলেন, “বৃষ্টি থাকলেও তো কেনাকাটা বন্ধ করা যায় না। পুজো একবারই আসে, কিন্তু এই ভেজা আবহাওয়ায় বের হওয়া সত্যিই কষ্টকর।”বৃষ্টি এবং দুর্গাপুজোর সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের।

Screenshot 2025 09 04 164302

১৯৯৯ সালের পুজোতে টানা বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল প্যান্ডেল হপিং। আবার ২০১৭ সালেও কয়েকটি দিনে প্রচণ্ড বর্ষণে ভোগান্তি হয়েছিল রাজ্যবাসীর। এবারও যদি পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টি হয়, তবে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে শিল্পী, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের উপর।কারিগররা সময়মতো কাজ শেষ করতে না পারলে মণ্ডপে শিল্পের জৌলুস নষ্ট হতে পারে। ব্যবসায়ীরা যেমন আশঙ্কা করছেন, তেমনি হকার থেকে বড় দোকান সব জায়গাতেই লোকসানের সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি, বৃষ্টি থাকলে যানজট এবং ভিড় সামলাতে প্রশাসনের উপর চাপ বাড়বে।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ মৌসুমি বায়ু বিদায় নেবে। অর্থাৎ মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি কিছুটা কম হতে পারে, দক্ষিণবঙ্গেই বেশি সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছে—প্রয়োজনে জলমগ্ন এলাকা থেকে দ্রুত জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হবে। পুজোর আনন্দ যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য সেচ দফতর ও পুরসভাগুলিকে বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments