protests by dropping rice seedlings and fishing nets in Namkhana: নামখানার দ্বারিকনগর হাসপাতাল মোড় থেকে হরিপুর খেয়াঘাটের রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এই বিষয়টি বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। সিপিএমের কর্মী ও সমর্থকরা বৃহস্পতিবার সকালে চন্দনপিড়িতে জল জমে থাকা রাস্তায় জাল ফেলে এবং ধান গাছের চারা লাগিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে এই কর্মসূচি চলে। নামখানার সিপিএম নেতা সজলকুমার ঘোড়ই বলেন, নামখানা ব্লকের চন্দনপিড়ি ও দ্বারিকনগর গ্রাম সংযোগকারী প্রধান রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বেশিরভাগ জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সাইকেল চালিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, হেঁটেও ঠিকমতো যাতায়াত করা যায় না। তার উপর এক পশলা বৃষ্টি হলে প্রায় হাঁটুসমান জল জমে যায়। অথচ এই রাস্তার পাশে দুটি উচ্চ মাধ্যমিক ও তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় প্রায় দিনই পড়ে গিয়ে আহত হয়। এছাড়াও এই রাস্তায় পড়বে দ্বারিকনগর প্রাথমিক হাসপাতাল। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতেও খুব সমস্যা হয়। রাস্তাটি মেরামত করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছিল। কিন্তু আজও পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। রাস্তা মেরামতের দাবি জানিয়েই আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি করলাম। কিছুদিনের মধ্যে এটি মেরামত করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।

সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা এ প্রসঙ্গে বলেন, ২০০২-০৩ আর্থিক বর্ষে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছিল। রাস্তা মেরামতের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ডিআরডিসি-তে এখন আর টাকা দিচ্ছে না। তাই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হবে। নামখানা হাসপাতাল মোড় থেকে হরিপুর খেয়া ঘাট পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বর্ষা হতেই রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গাড্ডা। আর এই বড় বড় গাড্ডাতে ধানের চারা লাগিয়ে এবং মাছ ধরার জাল ফেলে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সিপিএম কর্মী সমর্থকেরা। অভিযোগ গত দু’বছর ধরে হাসপাতাল মোড় থেকে হরিপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল হয়ে রয়েছে। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো রকম কাজ হয়নি। বর্ষাকালে চলাচল করাই দায় হয়ে পড়ে। বেশ কয়েকটি স্কুল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। অবিলম্বে রাস্তাটি রিপেয়ার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নামখানা অঞ্চলটি সুন্দরবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে রাস্তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বর্ষাকালে রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায়, যা মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলে। সিপিএমের বিক্ষোভ এবং তাদের দাবিগুলি শুধুমাত্র রাজনৈতিক আন্দোলনের অংশ নয়, বরং এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলির প্রতিফলন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “রাস্তাগুলি ঠিক না হলে আমাদের দৈনন্দিন জীবন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টকর। রোগীদের জন্য এটি আরো বেশি সমস্যা সৃষ্টি করছে।”

সিপিএম নেতা সজলকুমার ঘোড়ই বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তা মেরামতের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা চাই অবিলম্বে এই রাস্তা মেরামত করা হোক, না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”
সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, “এই রাস্তা মেরামতের জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে আর্থিক সহায়তা না পাওয়ার কারণে সমস্যা হচ্ছে, তবে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমরা খুব শীঘ্রই মেরামতের কাজ শুরু করব।”
এটি শুধুমাত্র নামখানা এলাকার একটি সমস্যার প্রতিফলন নয়, বরং এটি সমগ্র অঞ্চলের একটি সাধারণ সমস্যা। রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ছে। অবিলম্বে মেরামত না করা হলে এই সমস্যার পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে এবং মানুষের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাবে।
এই ধরনের পরিস্থিতি স্থায়ীভাবে মেরামতের জন্য প্রয়োজন একটি সুসংগঠিত এবং কার্যকর পদক্ষেপ। স্থানীয় প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। সাধারণ মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে এই ধরনের মেরামত কাজ অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুনঃ ১১১ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করে নজির গড়ার চেষ্টা নদিয়ায়