Promises were fulfilled, hospital not built, locals protest:পুরুলিয়া জেলার মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের বোরো থানার অন্তর্গত ডাঙ্গর ডি মোড়ে এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে কারণ তিন বছর আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজও হাসপাতাল তৈরি হয়নি এলাকার সাধারণ মানুষ বিশেষত মহিলারা এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তাদের ক্ষোভের কারণ একটাই তিন বছর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে এখানে একটি গ্রামীণ হাসপাতাল তৈরি করা হবে জমি চিহ্নিতকরণের কাজও সম্পন্ন হয়েছিল কিন্তু এরপর সময় গড়িয়ে গেলেও হাসপাতাল তৈরির কোনো কাজ শুরু হয়নি এই অবস্থায় এলাকার মানুষ চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন কারণ চিকিৎসার জন্য বান্দোয়ান বা পুঞ্চা যেতে হচ্ছে যা সময় ও অর্থ দুই দিক থেকেই সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছেবিক্ষোভকারীদের অভিযোগ তারা বহুবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে এই বিষয়ে জানিয়েছেন কিন্তু প্রতিবারই শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বাস্তব কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি তারা অভিযোগ করেন এমপি হোক বা এমএলএ সবাই শুধু আসার সময় বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু নির্বাচনের পর আর কেউ ফিরে তাকান না এলাকার বাসিন্দা গীতাদেবী বলেন আমার পরিবারে একবার এক রাতে একজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তখন হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক দেরি হয়ে যায় কারণ কাছাকাছি কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই আর্থিক সমস্যার কারণে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারিনি

যদি এই এলাকায় হাসপাতাল থাকত তাহলে হয়তো অনেকের জীবন বাঁচানো যেতশুধু গীতাদেবী নয় একই অভিজ্ঞতা আরও অনেকেরই এলাকার এক প্রবীণ ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথ মাহাতো জানান আমাদের এখানে একটি ভালো হাসপাতালের খুবই প্রয়োজন কারণ চিকিৎসার অভাবে বহু মানুষ সময়মতো চিকিৎসা পান না অনেক সময় পথেই মৃত্যু ঘটে অথচ প্রশাসন কিছুই করছে না বারবার বলার পরও হাসপাতাল হচ্ছে নাশুক্রবার শতাধিক মহিলা বান্দোয়ান-মানবাজার রাস্তা অবরোধ করেন তাদের দাবি স্পষ্ট অবিলম্বে হাসপাতালের কাজ শুরু করতে হবে প্রশাসন যদি আর দেরি করে তাহলে আন্দোলন আরও বৃহৎ হবে বিক্ষোভের জেরে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এলাকার মানুষজনও এই বিক্ষোভে সমর্থন জানান কারণ এটি শুধুমাত্র মহিলাদের দাবি নয় এটি গোটা এলাকার সাধারণ মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছেখবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বোরো থানার পুলিশ তারা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং আশ্বাস দেন যে তারা প্রশাসনের উচ্চ মহলে এই বিষয়টি জানাবেন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় আমরা আপনাদের কষ্ট বুঝতে পারছি আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করব যাতে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয় কিন্তু বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য এতদিনেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবার তারা শুধু আশ্বাস নয় কাজ দেখতে চান
এই ঘটনার পর প্রশাসনের তরফ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে এটি শুধু পুরুলিয়ার একটি সমস্যা নয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে হাসপাতালের অভাবে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন গ্রামগঞ্জের মানুষদের চিকিৎসার জন্য বড় শহরে ছুটতে হয় যা তাদের জন্য একটি বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়ায় এই পরিস্থিতিতে যদি প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তবে ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলন হতে পারেএই ঘটনার রাজনৈতিক দিকও রয়েছে কারণ সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে এবং সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এই নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছেন তবে তারা এখনও স্পষ্টভাবে কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি শুধুমাত্র প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হচ্ছে এমনটাই জানা গেছে