Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য শান্তিনিকেতনে প্রাক বসন্ত উৎসব আম্রকুঞ্জে

 শান্তিনিকেতনে প্রাক বসন্ত উৎসব আম্রকুঞ্জে

Pre-Spring Festival at Amrakunja in Santiniketan শান্তিনিকেতনের প্রাক বসন্ত উৎসব, যা প্রতিবছরই সাধারণত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ গুরুত্ব পায়, এবছর আরও ভিন্নমাত্রায় উদযাপিত হয়েছে। বিশেষ করে, এবছর প্রাক বসন্ত উৎসবটি আম্রকুঞ্জে এক নতুন রূপে অনুষ্ঠিত হয়, যা সকল উপস্থিতির হৃদয়ে বসন্তের আগমন বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। চলতি বছর, ১১ মার্চের বসন্ত উৎসবের আগে, স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রীদের নাচ এবং গান দিয়ে পুরো অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় জনগণ, আশ্রমিক অধ্যাপকরা এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একসাথে এই আনন্দদায়ক মুহূর্তের অংশীদার হন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর বসন্তের আগমনে যা কিছু ঘটে, সেইসব দৃশ্য এক কথায় অপূর্ব! হাজারো ফুলের সমারোহ, মিষ্টি গান, প্রাণবন্ত নাচ— এই সবই যেন শান্তিনিকেতনকে এক নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করে। বিশেষ করে, আম্রকুঞ্জের পরিবেশ ছিল একদম আলাদা। সেখানকার সবুজের মাঝে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, যা শুধু উৎসবকে নয়, প্রকৃতির সৌন্দর্যকেও তুলে ধরেছিল। এই অনুষ্ঠানে, স্থানীয় বাসিন্দারা এবং আশ্রমিক অধ্যাপকরা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নাচ এবং গান দিয়ে পুরো উৎসবকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে।

1646313468 1606239557 5fbd4545f2dce basanta utsav at santiniketan

এখানে আসা মানুষের মুখে একটাই কথা, ‘শান্তিনিকেতনে বসন্তের আমেজ সবসময় আলাদা। এবছর সেটা আরও একধাপ এগিয়ে গেছে।’ তাদের মতে, শান্তিনিকেতন শুধু এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি এক সাংস্কৃতিক মিলনমেলা। একে কেন্দ্র করে এখানে বসন্ত উৎসব উদযাপন নিঃসন্দেহে মানুষের মনে এক বিশেষ অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এবছর প্রাক বসন্ত উৎসবের আয়োজন বিশেষভাবে নতুন ধাঁচে করা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম, প্রাক বসন্ত উৎসব শুধু এক সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ না হয়ে, যেন এটি পুরো শান্তিনিকেতনের মানুষের সাথে একাত্মতা সৃষ্টি করে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক, যিনি এবছর উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন, বলছেন, ‘এ ধরনের একটি উৎসব শুধু আমাদেরই নয়, পুরো শান্তিনিকেতন শহরের জন্য এক মহান উৎসাহের বিষয়। এতে ছাত্রছাত্রীরা যেমন আনন্দ পায়, তেমনই সবার মধ্যে এক সাংস্কৃতিক চেতনাও জাগ্রত হয়।’

এবছর, প্রাক বসন্ত উৎসবের মাধ্যমে শান্তিনিকেতনে এমন এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যা শুধুমাত্র পঠনপাঠনের বাইরে মানুষের একাত্মতায় নতুন দিশা দেখিয়েছে। এ উৎসবের মাধ্যমে, যেমন ছাত্রছাত্রীরা আনন্দিত হয়েছে, তেমনই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক ঐক্যবোধ তৈরি হয়েছে। এর ফলে, আগামী দিনের শান্তিনিকেতনে এমন উৎসবের মাধ্যেমে সাংস্কৃতিক অঙ্গন আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে, এই উৎসবের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা যেমন এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে, তেমনই স্থানীয় জনগণও তাদের সংস্কৃতিকে নতুনভাবে উপলব্ধি করেছে। এই উৎসবের মাধ্যমে শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং ভালোবাসা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শান্তিনিকেতন আরও একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হবে।

নতুন প্রজন্মের জন্য প্রাক বসন্ত উৎসবটি শুধু এক অনুষ্ঠান নয়, এটি তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠছে। শান্তিনিকেতনের প্রাক বসন্ত উৎসবের আনন্দ, স্থানীয় মানুষের হাসি, ছাত্রদের নাচ, গান এবং পরিবেশ—এই সমস্ত কিছুই এক বিশাল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সঙ্গী করে চলেছে।

shilpakala spring

বসন্তের আগমনে শান্তিনিকেতনের প্রাক বসন্ত উৎসবের গুরুত্ব, প্রভাব, এবং এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে সকলের চিন্তাভাবনা একত্রিত হলে, এর পরিণতি হবে বিশেষ। এটি শুধু শহরের সাংস্কৃতিক জগতকেই সমৃদ্ধ করবে না, বরং শান্তিনিকেতনকে নতুন এক শিখরে পৌঁছাবে। বসন্ত উৎসবের আনন্দে সবাই মেতে উঠবে, এবং শান্তিনিকেতনের এই বর্ণিল আবহাওয়া সকলের মনে চিরকালীন স্মৃতি হয়ে থাকবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments