Paush festival of Visva Bharati begins:বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা আবারও নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে। চার বছর বিরতির পর পূর্বপল্লির মাঠে ফিরে এসেছে শান্তিনিকেতনের এই বিশেষ উৎসব, যা স্থানীয় মানুষ, ছাত্রছাত্রী এবং পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনার সৃষ্টি করেছে। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণে ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে বৈতালিক, ছাতিমতলায় বৈদিক মন্ত্রপাঠ, রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং বাউল গানের মধ্য দিয়ে পৌষ উৎসবের সূচনা হয়
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয়কুমার সরেন এই মেলার শুভ সূচনা করেন। তিনি বলেন, “সবাই এই উৎসবে অংশ নিন এবং আনন্দে মাতুন। প্রথা মেনে পৌষ উৎসব শুরু হয়েছে এবং আমরা চেষ্টা করব এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে।”২০১৯ সালে শেষবার বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের উদ্যোগে পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে কোভিড মহামারির কারণে এই মেলা বন্ধ রাখতে হয়। এরপর ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত নানা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে মেলা আয়োজন বন্ধ ছিল। বিশেষ করে তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাতের ফলে মেলা আয়োজন নিয়ে একাধিক বিতর্ক দেখা দেয়। তবে, এ বছর পূর্বপল্লির মাঠে মেলার ফিরে আসা শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।এবারের মেলায় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা সকলেই উচ্ছ্বসিত। বিশ্বভারতীর ছাত্রী কোয়েল মুখোপাধ্যায় বলেন, “২০১৯ সালের পর আবার সেই চেনা ছন্দে মেলা হচ্ছে। আমাদের সবার প্রিয় পৌষমেলা আবার ফিরে এসেছে, যা আমাদের কাছে একটি আবেগের বিষয়।”
শান্তিনিকেতনের এই মেলা শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক উৎসব নয়; এটি বাংলার গ্রামীণ শিল্প, হস্তশিল্প এবং স্থানীয় ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। মেলায় বিভিন্ন ধরনের স্টল দেখা যাচ্ছে, যেখানে স্থানীয় হস্তশিল্প, গয়না, পোশাক এবং খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।শান্তিনিকেতনের এই মেলা শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক উৎসব নয়; এটি বাংলার গ্রামীণ শিল্প, হস্তশিল্প এবং স্থানীয় ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। মেলায় বিভিন্ন ধরনের স্টল দেখা যাচ্ছে, যেখানে স্থানীয় হস্তশিল্প, গয়না, পোশাক এবং খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।মেলার সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের জন্য একটি মানচিত্রও রাখা হয়েছে, যা পথনির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে।বিশ্বভারতীর পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতীক। চার বছর পর মেলার ফিরে আসা শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের নয়, সমগ্র বাংলার জন্যই একটি বিশেষ উপলক্ষ। এটি শুধুমাত্র আনন্দ ও বিনোদনের উৎস নয়, বরং বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের এক মিলনক্ষেত্র।
এই মেলা আরও একবার প্রমাণ করে দিল, শান্তিনিকেতন শুধুমাত্র একটি জায়গা নয়, এটি একটি আবেগ, যা সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।