Now the earth is only gold! But which planet?: মহাকাশ গবেষণার জগতে এক চমকপ্রদ আবিষ্কার নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখন আলোড়িত। পৃথিবীর কাছাকাছি মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মাঝখানে অবস্থিত এক বৃহৎ গ্রহাণু “১৬ সাইকি”। একে বিজ্ঞানীরা ভালোবেসে “গোল্ড প্ল্যানেট” বলেও ডাকেন, যদিও এটি কোনও গ্রহ নয়, বরং একটি ধাতব গ্রহাণু। সাইকি’র মাটি সমৃদ্ধ সোনা, প্লাটিনাম, লোহা, নিকেল এবং আরও অনেক মূল্যবান ধাতুতে। বিজ্ঞানীদের মতে, যদি এই গ্রহাণুর সম্পদ পৃথিবীতে আনা সম্ভব হয়, তাহলে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ কোটিপতি হয়ে উঠতে পারেন।‘১৬ সাইকি’ গ্রহাণুটি প্রথম আবিষ্কার হয় ১৮৫২ সালে ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আনিবাল ডি গ্যাসপারিসের মাধ্যমে। এটি সূর্যের চারদিকে ঘোরে প্রায় পাঁচ পৃথিবী বছরের একটি কক্ষপথে। এর ব্যাস প্রায় ২২৬ কিলোমিটার এবং এর কোর গঠিত লোহা, নিকেল এবং সোনার মতো ধাতব পদার্থে। সাইকি’র সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল, এটি সম্পূর্ণ ধাতব—অন্য কোনো গ্রহাণুর মতো পাথুরে নয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এটি কোনো এক সময়ে একটি প্রোটোপ্ল্যানেটের কেন্দ্র বা কোর ছিল, যা মহাকাশের সংঘর্ষে তার বাইরের স্তর হারিয়ে শুধুমাত্র ধাতব কোর হিসাবে টিকে আছে।
এই মূল্যবান গ্রহাণুর বিস্তারিত বিশ্লেষণের জন্য NASA ইতিমধ্যেই ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর এক বিশেষ মহাকাশ মিশন শুরু করেছে। এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে “Psyche Mission”। মহাকাশযানটি ২০২৯ সালে সাইকি’র কক্ষপথে পৌঁছাবে এবং তখন এটি গ্রহাণুটির গঠন, ধাতব উপাদান এবং এর সম্ভাব্য ব্যবহারযোগ্য খনিজ সম্পদ বিশ্লেষণ করবে।NASA-এর এক বিজ্ঞানী বলেন, “সাইকি হল আমাদের সৌরজগতের গঠন বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। এর কোরের বিশ্লেষণ থেকে আমরা পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারব।”
সাইকি থেকে যদি সম্পদ পৃথিবীতে আনা যায়, তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরাট পরিবর্তন ঘটতে পারে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই গ্রহাণুতে থাকা সম্পদ পৃথিবীতে আনা সম্ভব হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ যোগ হবে। প্রত্যেক মানুষের ভাগ্যে আসতে পারে বিশাল সম্পদ। তবে এটি কতটা বাস্তবায়িত করা সম্ভব, তা নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল সম্পদ পৃথিবীতে এলে সোনার দাম তলানিতে ঠেকতে পারে, যা বিশ্ববাজারে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কেউ ভাবছেন, সাইকি থেকে সোনা এনে নিজের জীবন বদলানো যাবে। আবার অনেকে বলছেন, এটি মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক বড় পদক্ষেপ।জলপাইগুড়ির এক শিক্ষার্থী অভীক দত্ত বলেন, “সাইকি নিয়ে আমি অনেক কিছু পড়েছি। এটি শুধু ধাতু পাওয়ার বিষয় নয়, বরং মহাকাশ বিজ্ঞানে একটি মাইলফলক হতে চলেছে।”
NASA-এর এই মিশন সফল হলে শুধু সাইকি নয়, ভবিষ্যতে আরও অনেক গ্রহাণু নিয়ে গবেষণা করা সম্ভব হবে। তবে, এর মধ্যে বড় চ্যালেঞ্জ হল সাইকি থেকে সম্পদ উত্তোলন এবং পৃথিবীতে তা নিরাপদে আনা। এছাড়া, এত বিশাল সম্পদের বণ্টন কীভাবে করা হবে এবং তা পৃথিবীর অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, সেই প্রশ্নও গুরুত্বপূর্ণ‘গোল্ড প্ল্যানেট’ সাইকি শুধু সম্পদের দিক থেকেই নয়, বরং সৌরজগতের গঠন ও ইতিহাস বোঝার জন্যও অমূল্য। এটি মানব সভ্যতার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। NASA-এর এই মিশন সফল হলে মহাকাশ গবেষণার নতুন দিক খুলে যাবে এবং মানুষ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে মহাকাশের অজানা রহস্য উন্মোচনের পথে।