...
Friday, April 4, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসসেজে উঠছে উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ শৈব তীর্থ জল্পেশ ধাম

সেজে উঠছে উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ শৈব তীর্থ জল্পেশ ধাম

North Bengal’s largest Shaivite pilgrimage site, Jalpesh Dham, is getting ready: উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান শৈব তীর্থস্থান জল্পেশ ধাম আবারও সেজে উঠছে শিব চতুর্দশী উপলক্ষে। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে জরদা নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দিরটি প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশীতে বিশেষ পূজা ও মেলার আয়োজন করে, যা লক্ষাধিক ভক্তের সমাগমে মুখরিত হয়। এবারের মেলাটি শুরু হচ্ছে চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে, যা কুম্ভের শাহী স্নানের শেষদিনের সাথে মিলে যাচ্ছে। ফলে, যারা কুম্ভে যেতে পারেননি, তাদের অনেকেই এখানে আসবেন বলে মন্দির কমিটি আশা করছে।

মন্দিরের গায়ে নতুন রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে, সাজিয়ে তোলা হয়েছে মন্দির চত্বর। নিরাপত্তার জন্য মন্দির চত্বরে ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে এবং প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মন্দির কমিটির ভলান্টিয়ার ও সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে। এছাড়া, ভিড় সামাল দিতে মন্দিরের গর্ভগৃহের পূজো এবার জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে সকল ভক্তরা পূজো উপভোগ করতে পারেন।

জল্পেশ মন্দিরের ইতিহাস প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। ১৫২৪ সালে কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণের পিতা বিশ্ব সিংহ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে, ১৬৬৩ সালে রাজা প্রাণ নারায়ণ মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন। মন্দিরের শিবলিঙ্গটি একটি গর্তের মধ্যে অবস্থিত, যা অনাদি নামে পরিচিত।

Screenshot 2025 02 15 142641

মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, “প্রতিবারই জল্পেশে ভিড় বাড়ছে। চলতি বছরেও তাই সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা আগেভাগে নেওয়া হচ্ছে।” জল্পেশ মেলা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য বহন করে। মেলাকে ঢেলে সাজাবার জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মেলার মূল মাঠে সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরি হয়েছে, যেখানে কয়েকদিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।

নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। তিন বছর আগে পুজো শেষে ফেরার পথে গাড়িতে শর্ট সার্কিটে ১০ জন পুণ্যার্থী প্রাণ হারান এবং প্রায় ২০ জন জখম হন। সেই ঘটনার পর থেকে মন্দির কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এবারও ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জল্পেশ মন্দিরের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। এরপর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর সেই কাজের বরাত পায়। ইতিমধ্যে মন্দির সংস্কারের পাশাপাশি স্কাইওয়াক তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। শিবরাত্রির আগে জল্পেশ মন্দিরকে ঢেলে সাজাবার কাজও প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে।

ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুমুদরঞ্জন রায় বলেন, “জল্পেশ মন্দিরের উন্নয়নে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আশা করি, তাঁর হাত দিয়েই চালু হবে স্কাইওয়াক।” জল্পেশ মন্দিরের এই শিব চতুর্দশী মেলা শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি উত্তরবঙ্গের মানুষের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতিফলন। প্রতি বছর এই মেলা স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ মেলায় আসা ভক্ত ও পর্যটকদের কারণে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হয়।এবারের মেলায় ভিড় আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ কুম্ভের শাহী স্নানের শেষদিনের সাথে মেলার শুরু মিলে যাচ্ছে। ফলে, যারা কুম্ভে যেতে পারেননি, তারা জল্পেশ মন্দিরে এসে পূজা ও মেলায় অংশগ্রহণ করবেন। এতে স্থানীয় হোটেল, রেস্তোরাঁ ও দোকানপাটে ব্যবসার পরিমাণ বাড়বে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

Screenshot 2025 02 15 142707

মন্দির কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসন মেলাকে সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে পরিচালনা করতে বদ্ধপরিকর। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এবং ভক্তদের সুবিধার জন্য মন্দির চত্বরে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এতে ভক্তরা নির্বিঘ্নে পূজা ও মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।জল্পেশ মন্দিরের এই শিব চতুর্দশী মেলা উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবনে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনক্ষেত্র, যা মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বার্তা বহন করে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.